ইউক্রেনের খারকিভ শহরে আঘাত হানা একটি ক্ষেপণাস্ত্র উত্তর কোরিয়ার তৈরি বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের এক অস্ত্র পরিদর্শক।
এর মাধ্যমে প্রায় আড়াই বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক নতুন দিকে মোড় নিলো। রোববার (৫ মে) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
চলতি বছরের ২ জানুয়ারি খারকিভ শহরে সেই হামলা হয়। এরপর ইউক্রেনের তরুণ অস্ত্র পরিদর্শক ক্রিস্টিনা কামিচুক দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং রাজধানী কিয়েভের রক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্রের অংশবিশেষের দেখা পান। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ক্রিস্টিনা নিশ্চিত হন, এটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র নয়।
ক্ষেপণাস্ত্রের অংশবিশেষের মধ্যে ক্রিস্টিনা কোরীয় একটি বর্ণ খোদাই করা অবস্থায় দেখতে পান। ক্ষেপণাস্ত্রের বিভিন্ন অংশে ১১২ লেখা আছে, যা উত্তর কোরিয়ার ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৩ সাল।
কনফ্লিক্ট আর্মামেন্ট রিসার্চ (সিএআর) নামের একটি সংগঠনের কর্মী ক্রিস্টিনা কামিচুক। এই সংগঠন যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র নিয়ে গবেষণা করে থাকে।
তিনি বিবিসিকে টেলিফোনে জানান, আমরা শুনেছি তারা (উত্তর কোরিয়া) রাশিয়াকে কিছু অস্ত্র সরবরাহ করেছে। এখন সেরকম একটি অস্ত্র দেখতে পাচ্ছি, পরীক্ষা করতে পারছি, যা এর আগে কেউ পারেনি। বিষয়টা খুবই উত্তেজনাকর।
অস্ত্র পরিদর্শক ক্রিস্টিনার দাবি, ২ জানুয়ারির খারকিভ শহরে হামলায় ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে অত্যাধুনিক স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।
এই তথ্য প্রকাশের পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, রাশিয়া থেকে ইউক্রেনে সাম্প্রতিক সময়ে অসংখ্য উত্তর কোরীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। এসব হামলায় অন্তত ২৪ জন নিহত ও ৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
লন্ডন-ভিত্তিক সংস্থা রয়াল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের (রুসি) উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ জোসেফ বিরনে এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, কখনো ভাবিনি আমরা উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউরোপের কোনো ভূখণ্ডে মানব হত্যার দৃশ্য দেখব!
এদিকে স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, রুশ পণ্যবাহী চারটি জাহাজ বেশ কয়েকবার উত্তর কোরিয়া ও একটি রুশ সামরিক বন্দরের মধ্যে আসা যাওয়া করেছে। প্রতি যাত্রায় একশর বেশি কন্টেইনার আনা-নেওয়া করা হয়।