যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘাতক অস্ত্র ‘প্রিডেটর ড্রোন’ নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। এখন শুধু হাতে পাওয়ার অপেক্ষা। অনেক দিন ধরেই এই ড্রোন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলছিল ভারতের। অবশেষে দু’দেশের মধ্যে ৩২ হাজার কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তার বিনিময়ে ভারতের হাতে ৩১টি ‘প্রিডেটর ড্রোন’ তুলে দেবে আমেরিকা।
অনেকেই মনে করছেন, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনের সঙ্গে বিবাদের আবহে এই চুক্তি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বিমান বাহিনীর জন্য প্রিডেটরের ‘এমকিউ-৯বি’-র ‘সি গার্ডিয়ান’ এবং ‘স্কাই গার্ডিয়ান’ সংস্করণ কেনার জন্য সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ডেলওয়ারে ‘কোয়াড’ শীর্ষ সম্মেলন হয়। সেখানে যান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তার আলোচনাও হয়। তার এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই ড্রোন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনার ফল বলেই মনে করা হচ্ছে। মোদি সরকারের ক্যাবিনেট কমিটি গত সপ্তাহেই এই চুক্তির বিষয়ে অনুমোদন দেয়। ৩১টি ড্রোনের মধ্যে ১৫টি পেতে পারে নৌসেনা, ৮টি স্থলসেনা এবং বাকি ৮টি বিমানবাহিনী।
তালেবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমর থেকে আল কায়দা প্রধান আয়মান আর জাওয়াহিরি- দুই দশকে মার্কিন প্রিডেটর ড্রোনের ‘শিকারের’ তালিকায় এমন অনেকেই রয়েছেন। জেনারেল অ্যাটোমিক্স-এর তৈরি এই ড্রোনের পোশাকি নাম এমকিউ-৯বি। ২০১৭ সালে এই ড্রোন ভারতকে দেওয়ার ঘোষণা করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মোট ৩১টি প্রিডেটর ‘এমকিউ-৯বি’-র ‘সি গার্ডিয়ান’ এবং ‘স্কাই গার্ডিয়ান’ সংস্করণ কেনার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, তার পর ছয় বছর কেটে গিয়েছে। অবশেষে সেই চুক্তি স্বাক্ষর হল দুই দেশের মধ্যে।
৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় ২৭ ঘণ্টা ধরে একটানা ওড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রিডেটর ড্রোন হাতে এলে ভবিষ্যতে ভারতীয় সেনার পক্ষে বিনা ঝুঁকিতেই বালাকোটের মতো অভিযান চালানো সম্ভব হবে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।
১,৭০০ কিলোগ্রামের বেশি ওজনের বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম এই ড্রোন পেতে উৎসাহী ছিল ভারতীয় সেনাও। কিন্তু বাদ সাধে ২০২১ সালে মোদি সরকারের একটি পদক্ষেপ। প্রতিরক্ষা উৎপাদনে ভারতকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে ১০১টি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই তালিকায় ছিল বিদেশে তৈরি ড্রোনও। অবশেষে সেই জটিলতা কাটল।