ঢাকা | বঙ্গাব্দ

আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথ খুঁজছে বাংলাদেশ

পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে আদানির কয়লার মান খারাপ হলেও দাম বেশি।
  • | ০২ ডিসেম্বর, ২০২৪
আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পথ খুঁজছে বাংলাদেশ ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে বিতর্কের কেন্দ্রে ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপ। যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগে চাপে পড়েছে গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠান। এর প্রভাবে বিভিন্ন দেশ আদানির সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশও এই তালিকায় রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের স্বার্থবিরোধী শর্তের কারণে আদানি চুক্তি বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত সৌরশক্তি প্রকল্পের কাজ পেতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে। ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এই কাজের জন্য আদানি গ্রুপ কর্তৃক ঘুষ দেওয়ার প্রমাণ উঠে এসেছে। এর ফলে আদানি গ্রুপের শেয়ারবাজারের মূল্য ব্যাপকভাবে কমেছে।


যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পর কেনিয়া আদানি গ্রুপের দুটি বড় চুক্তি বাতিল করেছে। এর মধ্যে একটি ছিল বিমানবন্দর পরিচালনার এবং অন্যটি বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের। এই ঘটনাগুলো আদানি গ্রুপের ভাবমূর্তিতে বড় আঘাত হেনেছে।


শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার আদানির সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে। দেশটির সিলন বিদ্যুৎ বোর্ড জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে চুক্তির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।


২০১৭ সালে ভারতের ঝাড়খণ্ডে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়। চুক্তিতে বিদ্যুৎ কেনার শর্তগুলো বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর বলে বিশ্লেষকদের দাবি। চুক্তি অনুযায়ী, নির্ধারিত পরিমাণ বিদ্যুৎ কিনতে না পারলেও দাম পরিশোধ করতে হবে। এমনকি আদানির কয়লা সরবরাহের খরচও অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অনেক বেশি।


পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে আদানির কয়লার মান খারাপ হলেও দাম বেশি। গত ১৫ মাসে শুধু কয়লার দামেই বাংলাদেশ থেকে আদানি ৩ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে।


আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আদানিসহ বড় বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি চুক্তিগুলোতে অনিয়ম খুঁজে দেখছে। আন্তর্জাতিক মানের তদন্তকারী সংস্থাকে যুক্ত করে চুক্তি পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করা হয়েছে।


কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহসভাপতি এম শামসুল আলম বলেছেন, আদানির চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে। অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেছেন, চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য কমিটি কাজ করছে।


thebgbd.com/NIT