যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে গেল ২০ বছরে বেশ শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এই সময়ে কূটনীতি, রাজনীতি, ব্যবসা এবং সামরিক ক্ষেত্রে দেশ দুটি নিজেদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করেছে। বিশেষ করে চীনের আধিপত্য ঠেকাতে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রথাগত সম্পর্ক থাকার পরও, ওয়াশিংটন ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তবে এবার সেই ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি।
বিজেপি দাবি করছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ডিপ স্টেট উপাদানগুলো ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। দলের অভিযোগ, এসব উপাদান অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি সংগঠন এবং বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আঁতাত করে ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) বিজেপি জানায়, কংগ্রেস মোদিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) নামক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি সংগঠনের প্রতিবেদন ব্যবহার করেছে। ওই প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপ এবং মোদি সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সমালোচনা করা হয়েছে।
এছাড়া, নভেম্বরে ২৬৫ বিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি ও আরও সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে, যদিও আদানি গ্রুপ এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে, ওসিসিআরপি আরও জানয়, ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হ্যাকাররা ইসরায়েলি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সরকারবিরোধী সমালোচকদের লক্ষ্য করেছে। তবে মোদি সরকার আগেই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর আগে, বিজেপি দাবি করে, মোদির বিরুদ্ধে সমালোচনা করার জন্য রাহুল গান্ধী, ওসিসিআরপি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৯২ বছর বয়সী বিলিয়নিয়ার জর্জ সোরোস দায়ী।
সবশেষে, বৃহস্পতিবার একটি ফরাসি মিডিয়ার প্রতিবেদনের বরাতে বিজেপি দাবি করে, ওসিসিআরপি-এর ৫০ শতাংশ অর্থায়ন সরাসরি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সোরোসের মতো ডিপ স্টেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে আসে। বিজেপির ভাষ্য, ডিপ স্টেট-এর সুস্পষ্ট লক্ষ্য ছিল মোদিকে টার্গেট করা এবং ভারতকে অস্থিতিশীল করা। পরে, একই দিন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ও সংসদ সদস্য সম্বিত পাত্র এক আনুষ্ঠানিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএসএইড, সোরোস এবং কংগ্রেস পার্টি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিজেপির অভিযোগের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে, ওসিসিআরপি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি একটি স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। যদিও মার্কিন সরকার কিছু অর্থায়ন করে, তাদের সম্পাদকীয় নীতি ও প্রতিবেদনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব নেই। সূত্র: রয়টার্স
এসজেড