মাদারীপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ের হাসি হাসলেন ভাতিজা আসিবুর রহমান খানই। বুধবার (৮ মে) রাতে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। তার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারলেন শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও আসিবুর রহমান খানের চাচা দুই বারের সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান।
সদর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আহমেদ আলীর তথ্য মতে, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচন হয় আসিবুর রহমান খান। তিনি আনারস প্রতীকে ভোট পান ৭৫ হাজার ৫৯৪। আর পাভেলুর রহমান শফিক খান মোটরসাইকেল প্রতীকে পান ৬১ হাজার ৩০৩ ভোট। ভোটের হিসেবে ১৪ হাজার ২৯১ ভোট কম পেয়ে শফিক খান হেরে যান। এবার সদর উপজেলায় দুইজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয় মনিরুল ইসলাম তুষার ভূঁইয়া। তিনি তালা প্রতীকে ভোট পান ৬০ হাজার ১০৫ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন উড়োজাহাজ প্রতীকে এইচএম মনিরুজ্জামান আক্তার, তার প্রাপ্ত ভোট ৪৭ হাজার ২০৪। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয় ফারিয়া হাছান রাখি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন ফুটবল প্রতীকে ফারজানা নাজনীন। তার প্রাপ্ত ভোট ৪২ হাজার ১৯০ ভোট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার জানান, অল্প ভোটের ব্যবধানে ভাতিজার কাছে শফিক খানের পরাজয় হয়েছে। আর ভাতিজার জয়ের পিছনে তার বাবা শাজাহান খানের বড় ভূমিকা রয়েছে। শাজাহান খানের কারণেই আসিবুর রহমান খানের জয় হয়েছে। আসিব খানের বাবা ও তার দাদা মিলে মাদারীপুরে প্রায় ১০২ বছর রাজনৈতিক পরিধি। যে কারণে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতিনিধি নেয়া কঠিন। শফিক খানও শাজাহান খানের ইমেজ ব্যবহার করে দুই বার উপজেলার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। কিন্তু এবার শাজাহান খানের ছেলে চেয়ারম্যান হলো।
বিজয়ী হওয়ার পরে তার নিজ বাস ভবনের সামনে আসিবুর রহমান খান বলেন, ‘আপনারা আমাকে যে পরিমাণ ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন, তার ঋণ আমি কোনো দিনই শোধ করতে পারবো না। আমার এ বিজয় জনগণের বিজয়, আমার কোন বিজয় না। আমি আপনাদের নিয়েই উপজেলাকে সুন্দর করে সাজাবো। আমার পরিবারকে নিয়ে যারা বাজে মন্তব্য করেছে, তাদের নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমার পরিবার সেটা শিখাইনি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শে চলতে চাই।’
ছেলে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় জনতার উদ্দেশ্যে শাজাহান খান বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। এমন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত পরিবারকে যারা ছোট করতে চেয়েছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছে মাদারীপুরের জনগণ। আর আসিব খানকে আমি জনগণের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে দিয়েছি। যে কারণে জনগণ তাকে পুরস্কার দিয়েছে। যারা আমাদের ক্ষতি করেছে, আমি তাদের ক্ষতি করতে চাই না। জনগণই তাদের চির দিন ক্ষতি করে দিবে।’
তবে ফলাফলের বিষয় নিয়ে পাভেলুর রহমান শফিক খানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।