এই মুহূর্তে রাশিয়ার সামনে বড় উদ্বেগের বিষয় হল তার দুটি সামরিক ঘাঁটির ভাগ্য - লাতাকিয়ার হমিমিম বিমান ঘাঁটি এবং টারতুসে একটি বড় নৌ ঘাঁটি। যার দুটোই সিরিয়ার উপকূলে অঞ্চলে এবং এ দুটা ঘাঁটির কল্যানেই গত কয়েক বছরে মস্কোকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে একটি পা রাখার সুযোগ দিয়েছে। তাই আপাতত মস্কো সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি শক্তিশালি ভাষা ব্যবহারের চেষ্টা করছে যা এই অঞ্চলে তার ভবিষ্যত টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
যদিও মস্কো নয় বছর বাশার আল-আসাদকে সমর্থন করে গেছে এবং তাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য সামরিক সহায়তা দিয়ে গেছে, এখন তার পতনের পর সিরিয়ায় নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্কের চেষ্টা করছে। রাশিয়া এখন জোর দিচ্ছে যে তারা সর্বদা এই সংকটের একটি রাজনৈতিক নিষ্পত্তি চায়।
এখানে মজার বিষয় হল, খুব সম্প্রতি পর্যন্ত, রুশ মিডিয়া সিরিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করেছে। কিন্ত এখন এই শব্দটি সেখানে প্রতিবেদনগুলো থেকে বেরিয়ে গেছে এবং তার বদলে তাদের এখন ‘সশস্ত্র বিরোধী’ বা ‘বিরোধী দল’ বলা হচ্ছে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে ‘সম্পর্ক বজায় রাখছে’ এবং তারা এই অঞ্চলে তাদের সামরিক ঘাঁটির নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিশ্চয়তাও পেয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি আসলে এতটা সহজ নয়। বর্তমানে, সিরিয়ায় প্রায় ৭৫০০ রুশ সামরিক সদস্য রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই টারতুস এবং লাতাকিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় অবস্থান করছে।
তবে কয়েক ডজন রুশ সেনা, যাদের বেশিরভাগই এলিট স্পেশাল ফোর্সের সদস্য সিরিয়া জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বিদ্রোহীরা অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ইউনিটগুলির মধ্যে কয়েকটি রুশ ঘাঁটির কাছাকাছি সড়ে আসতে সক্ষম হয়, তবে কয়েক ডজন সেনাসদস্য মূল গ্রুপ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সিরিয়ায় কর্মরত সেনাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখেন এমন দুজন অবসরপ্রাপ্ত রুশ সেনা কর্মকর্তার লেখা ব্লগ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
রুশ নৌবাহিনীর বেশিরভাগ জাহাজই ৩ ডিসেম্বর টারতুস নৌ ঘাঁটি ছেড়ে গেছে। স্যাটেলােইট চিত্র দেখে এরইমধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিবিসি রাশিয়া। অন্যদিকে লাতাকিয়ায় যুদ্ধ বিমানগুলো এখনও এয়ারফিল্ডে রয়ে গেছে। একটি অসমর্থিত সূত্র জানিয়েছে, সোমবার থেকে সেই ঘাঁটি থেকে প্রথম বিমান এবং পরবর্তীতে সেখানকার কর্মীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে ঘাঁটিগুলোর বিষয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখনও কোনও ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
সূত্র: বিবিসি, আরটি
এসজেড