চার দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দরে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল নিয়ে পৌঁছেছে চারটি জাহাজ। এই জাহাজগুলোতে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থেকে আনা হয়েছে মোট ৫২ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল।
এমন এক সময়ে এই জাহাজগুলো বন্দরে এসেছে, যখন বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একই সময়ে সরকার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে। যদিও এই জাহাজগুলো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থেকে প্রায় এক মাস আগেই রওনা দিয়েছিল।
ব্যবসায়ীদের মতে, এই আমদানি বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ বাড়িয়ে সংকট কাটাতে সহায়তা করবে। দাম সমন্বয়ের ফলে রমজানের আগে আরও সয়াবিন তেল আমদানি হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বন্দরে পৌঁছেছে এমটি আরডমোর শায়ানি ও এমটি ডাম্বলডোর, যেগুলোতে রয়েছে ২১,৫০০ টন তেল। আজ মঙ্গলবার পৌঁছেছে এমটি সানি ভিক্টরি ও এমটি জিঙ্গা থ্রেশার, এই দুটি জাহাজে রয়েছে ৩০,৬০০ টন তেল। এর মধ্যে এমটি আরডমোর শায়ানি থেকে তেল খালাস শেষ হয়েছে এবং জাহাজটি বন্দরের কার্যক্রম সম্পন্ন করে ছেড়ে গেছে। সানি ভিক্টরি এসেছে ব্রাজিল থেকে, অন্য তিনটি এসেছে আর্জেন্টিনা থেকে।
জাহাজ কোম্পানির সূত্র জানিয়েছে, এই চারটি জাহাজের তেল আমদানি করেছে সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবং টিকে গ্রুপ। এর মধ্যে টিকে গ্রুপ আমদানি করেছে ২৫ হাজার টন, সিটি গ্রুপ ২০ হাজার টন এবং মেঘনা গ্রুপ ৭ হাজার টন।
টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার জানান, সরকারের মূল্য সমন্বয়ের আশ্বাসে এই তেল আমদানির প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছিল। দাম সমন্বয়ের কারণে রমজানে তেলের সংকট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বর্তমানে আমদানি করা তেলের প্রতি টনের খরচ ১,২১৭ ডলার পড়েছে।
সরকার নির্ধারিত নতুন দামে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের লিটারপ্রতি দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১৫৭ টাকায়। বন্দরে আসা ৫২ হাজার টন তেল পরিশোধন করে বোতলজাত করার পর বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৯৯৬ কোটি টাকা, যা দাম বৃদ্ধির আগে ছিল ৯৫০ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্দরে পৌঁছানো তেল প্রথমে খালাস করে কাস্টমসের নিয়ন্ত্রিত ট্যাংক টার্মিনালে রাখা হবে। শুল্ক পরিশোধের পর তা কারখানায় পরিশোধন করা হবে এবং তারপর বাজারে সরবরাহ করা হবে, যার জন্য এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
thebgbd.com/NIT