ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কোকেনের সবচেয়ে বড় চালানে জড়িতদের নাম পেয়েছে ডিএনসি

দেশে কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দের ঘটনায় জড়িত আন্তর্জাতিক চক্রের আর্থিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পেরেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
  • | ০৯ মে, ২০২৪
কোকেনের সবচেয়ে বড় চালানে জড়িতদের নাম পেয়েছে ডিএনসি সংগৃহীত

দেশে কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দের ঘটনায় জড়িত আন্তর্জাতিক চক্রের আর্থিক নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পেরেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। নাইজেরিয়া থেকে পাঠানো অর্থ কয়েক হাত ঘুরে আসতো বাংলাদেশে। পরে স্থানীয় মুদ্রা থেকে সেই অর্থ কনভার্ট করা হতো ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। আন্তর্জাতিক এই মাদক চক্রটির বাংলাদেশি এক সদস্যের খোঁজে নেমেছে ডিএনসি, যার মাধ্যমে মূলত অর্থ স্থানান্তর হতো।


ডন ফ্রানকি, নাইজেরিয়ান নাগরিক। বিয়ে উপলক্ষ্যে পার্টি আর সেখানে টাকা উড়ানো তার নেশা। এই ডন ফ্রানকির আরেকটি পরিচয় আছে। তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত নাইজেরিয়ান নাগরিকদের সংগঠনের সভাপতি। আরও একটি পরিচয় আছে তার! তিনি একটি আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের গডফাদার।


২৪ জানুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেনসহ মালাউইর নাগরিক নোমথান্দাজো টাওয়েরা সোকোকে গ্রেফতার করা হয়। এটি এখন পর্যন্ত দেশে জব্দকৃত কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান। যার বাজারমূল্য শতকোটি টাকা।


এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে আটজনকে। তাদের মধ্যে ছয়জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। কোকেন চোরাচালানের ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তে অগ্রগতিও হয়েছে বেশ। সামনে এসেছে আর্থিক নেটওয়ার্ক।


ডন ফ্রানকি নাইজেরিয়ান মাদক চক্রটির মূল হোতা। ঢাকার বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী চিদারা। বর্তমানে নাইজেরিয়ায় অবস্থানরত ফ্রানকি সেখানকার মুদ্রা নাইরা তুলে দিতেন চিদারার মা ক্যারোলিনা ওকোরি এবং প্রেমিকা মনিকার কাছে।


মনিকা একজন বাইন্যান্স ডিলার। তিনি সেই মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে চিদারার বাইন্যান্স ওয়ালেটে পাঠাতেন। নাইজেরিয়ায় থাকা অবস্থায় চিদারা তার বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট খোলেন। দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে থাকায় তার হিসাবটি স্থগিত করে বাইন্যান্স কর্তৃপক্ষ। তখন থেকে চক্রের বাংলাদেশি এক সদস্যের ওয়ালেটে টাকা আসতে থাকে। এই সদস্যদের নাম পরিচয় পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।


কাকে কত টাকা দিতে হবে সেই তালিকা নাইজেরিয়া থেকে অস্কারের কাছে পাঠাতেন ফ্রানকি। অস্কার সেই তালিকা দিতেন চিদারাকে। চিদারা সেই তালিকা দিতেন বাংলাদেশি একজনকে যাকে খুজঁছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)।


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক তানভীর মমতাজ বলেন, গ্রেফতার হওয়া সবাই ফ্রানকির কাছের। তারা বাংলাদেশে এটি ছড়িয়ে দিতে চায়। আর চোরাচালানের এই টাকার কিছু বাংলাদেশে থেকে যায়, আর কিছু বাইরে চলে যায়। ইতোমধ্যে আমরা মানিলন্ডারিং নিয়েও তদন্ত শুরু করেছি।


তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, কোকেনের কারবার চালান মূলত ডন ফ্রানকি এবং তার ভাই ডন উইজলি। উইজলি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ হয়ে কোকেনের প্রাথমিক গন্তব্য ছিল ভারত। সেখান থেকে ইউরোপ-আমেরিকার কোনো দেশ।


ডিএনসি বলছে, ফ্রানকির মাদক চক্র এর আগেও বাংলাদেশ হয়ে ইউরোপ-আমেরিকার কোকেন পাচার করেছে এমন তথ্যও তদন্তে বেরিয়ে আসছে।