ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নগদ টাকা তুলতে হিমশিম

নগদ অর্থ উত্তোলনে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪
নগদ টাকা তুলতে হিমশিম সংগৃহীত

নগদ অর্থ উত্তোলনে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক সময়ে অর্থপ্রবাহ কিছুটা বেড়েছে, তবে সংকট পুরোপুরি সমাধান হয়নি। বিশেষ করে এসএমই ব্যবসায়ী ও বিদেশগামীরা এ পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি বিপদে রয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করছেন, জমা রাখা বড় অঙ্কের অর্থ একসঙ্গে উত্তোলন করতে পারছেন না।


ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংকটে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে প্রয়োজনমতো অর্থ তুলতে না পারায় ব্যবসার দৈনন্দিন খরচ পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া এলসি ইস্যুতে সমস্যা হওয়ায় বিদেশি ব্যাংকগুলোও তাদের গ্যারান্টি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।


প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রথীন্দ্র নাথ পাল বলেন, “আমাদের কিছু ডিস্ট্রিবিউটরের টাকা আটকে গেছে, যা তাদের জন্য বেশ ঝামেলার কারণ হচ্ছে। তবে যারা ব্যাংকে অল্প টাকা রাখেন, তারা তেমন চাপে পড়েননি। তারা নিয়মিত পণ্য কিনছেন, বিক্রি করছেন এবং টাকা পরিশোধ করছেন। মূলত ডিফল্ট ব্যাংকগুলোতে হিসাবধারীদের টাকাই আটকে আছে।”


রাজধানীর পান্থপথে একটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখায় দেখা যায়, গ্রাহকরা স্বল্প পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করছেন। তবে ওই ব্যাংকের অন্য শাখায় চাহিদামতো অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। কাউন্টারে জানানো হয়, অনলাইন সেবা বন্ধ থাকায় টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।


মো. জুয়েল নামের এক জুয়েলারি দোকান মালিক জানান, “আমার অ্যাকাউন্টে সবসময় ১৪-১৫ লাখ টাকা থাকে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ১২ লাখ টাকা ধাপে ধাপে তুলে নিয়েছি। সব টাকা একসঙ্গে পাইনি, কয়েকবার চেক নিয়ে যেতে হয়েছে। এতে সময় নষ্ট হয়েছে। এখনো দুই লাখ টাকা আটকে আছে, যা ধীরে ধীরে উত্তোলন করছি। এই পরিস্থিতিতে এই ব্যাংকে বড় অঙ্কের লেনদেন করতে ভয় পাই।”


এক ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) জানান, “নগদ অর্থের সংকট এখনও কাটেনি। গ্রাহকদের প্রতিদিন কিছু টাকা দেওয়া হচ্ছে, তবে একই ব্যক্তিকে সপ্তাহে দুই দিন নিতে বলছি। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল, কিন্তু সেটা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। এখন মানুষ ব্যাংকের ওপর নতুন করে আস্থা ফিরিয়ে আনছে।”


কোহিনুর অ্যাগ্রো কেমিক্যালের স্বত্বাধিকারী সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “গত এক বছর ধরে আমাকে এই ব্যাংকে বেশ ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। আর সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। অনেকবার টাকা তুলতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি।”


ব্যবসায়ীদের মতে, ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরাতে এবং নগদ টাকার প্রবাহ স্বাভাবিক করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।


thebgbd.com/NIT