ঢাকা | বঙ্গাব্দ

এক গণকবরেই ১ লাখ লাশ, দাবি সিরীয় সংস্থার

সিরিয়ান ইমার্জেন্সি টাস্কফোর্স দাবি করেছে, রাজধানী দামেস্কের বাইরের একটি গণকবরে অন্তত এক লাখ জনকে সমাহিত করা হয়েছিল।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
এক গণকবরেই ১ লাখ লাশ, দাবি সিরীয় সংস্থার সিরিয়ার দারা অঞ্চলে একটি গণকবর এলাকায় কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।

সিরিয়া নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাডভোকেসি সংস্থা সিরিয়ান ইমার্জেন্সি টাস্কফোর্স দাবি করেছে, রাজধানী দামেস্কের বাইরের একটি গণকবরে অন্তত এক লাখ জনকে সমাহিত করা হয়েছিল। এদের সবাইকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সাবেক সরকারের আমলে হত্যা করা হয়েছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে রয়টার্স এই দাবির সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।


সিরিয়ান ইমার্জেন্সি টাস্কফোর্সের প্রধান মুয়াজ মোস্তাফা দামেস্ক থেকে রয়টার্সকে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘সিরিয়ার রাজধানী থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে আল-কুতাইফাহ নামক স্থানে অবস্থিত এই গণকবরটি (বাশার আল-আসাদের) পাঁচটি গণকবরের একটি।’ মোস্তফা বিগত কয়েক বছর ধরে কাজ করে এই গণকবরগুলো চিহ্নিত করেছেন।


মুয়াজ মোস্তাফা বলেছেন, ‘এক লাখ মানুষের এই সংখ্যাটি সবচেয়ে কম অনুমান। এটি খুবই, খুবই অতি রক্ষণশীল এবং প্রায় অন্যায্য একটি অনুমান।’ অর্থাৎ, মোস্তফার দাবি অনুসারে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি নিশ্চিত যে—এই পাঁচটির বাইরে আরও গণকবর আছে এবং ভুক্তভোগীদের মধ্যে কেবল সিরীয়রাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশর নাগরিকেরাও আছেন।


সিরিয়ায় ২০১১ সালে আবর বসন্তের ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে আসাদের শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমন পুরোপুরি গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। এরপর থেকে কয়েক লাখ সিরিয়ান নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। বাশার আল-আসাদ ও তার পিতা হাফিজ আল-আসাদ মিলে সিরিয়াকে ৫৪ বছর শাসন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আছে।


বাশার আল-আসাদ বারবার তার সরকারের বিরুদ্ধে আনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সমালোচকদের চরমপন্থী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সিরিয়ার জাতিসংঘ দূত কোসাই আল-দাহাক তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি নতুন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছেন এবং সিরিয়ার জনগণের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে প্রস্তুত।


মোস্তাফা সিরিয়ায় পৌঁছান বাশার আল-আসাদ রাশিয়ায় পালানোর পর। তিনি রয়টার্সকে বলেন, সিরিয়ার বিমানবাহিনীর গোয়েন্দা শাখা দায়িত্বে ছিল মরদেহগুলো সামরিক হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা। এরপর সেগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা শাখায় পাঠানো হতো এবং পরে গণকবরের পাঠানো হতো। তিনি জানান, মরদেহগুলো দামেস্কের পৌর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গণকবরে পাঠানো হতো। সেখানকার কর্মীরা লাশবাহী ফ্রিজিং কার থেকে ভেতর থেকে সেগুলো নামানোর কাজে সহায়তা করত।


মোস্তফা আরও বলেন, ‘যারা এসব গণকবরে কাজ করেছেন আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হয়েছি এবং যারা নিজেরা সিরিয়া থেকে পালিয়ে গেছেন অথবা আমরা যাদের পালাতে সাহায্য করেছি তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘অনেক বুলডোজারচালক জানিয়েছে—তারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী মরদেহগুলো গর্তে নামানোর আগে অনেকগুলো লাশকে চাপ দিয়ে সংকুচিত করতেন এবং পরে মাটিচাপা দিতেন।’


মোস্তাফা উদ্বেগ প্রকাশ করেন বলেন, ‘এসব গণকবর অরক্ষিত এবং তদন্তের প্রমাণ সংরক্ষণের জন্য সেগুলো রক্ষা করা প্রয়োজন।’


thebgbd.com/NIT