ঢাকা | বঙ্গাব্দ

অমুসলিমদের সঙ্গে আচরণের ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে যে দিকনির্দেশনা আছে

ইসলামে অমুসলিমদের সঙ্গে আচরণ করার ব্যাপারে কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
অমুসলিমদের সঙ্গে আচরণের ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে যে দিকনির্দেশনা আছে সংগৃহীত

ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ, ন্যায়সংগত এবং মানবিক আচরণ করতে উৎসাহিত করে।


ইসলামের শিক্ষা হলো অমুসলিমদের সঙ্গে শান্তি, ন্যায়পরায়ণতা এবং মানবিক আচরণ করা। তাদের অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ইসলামের মূল বার্তা হলো সাম্য, মানবতা, এবং ন্যায়বিচার, যা অমুসলিমদের প্রতিও সমভাবে প্রযোজ্য। 


১. ন্যায়পরায়ণতা এবং সদাচরণ: পবিত্র কুরআন এবং হাদিসে অমুসলিমদের সঙ্গে ন্যায়পরায়ণ এবং সদাচরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান! যে ব্যক্তি একজন অমুসলিম নাগরিকের (যিনি ইসলামের শাসনের অধীনে থাকেন) ওপর জুলুম করে, তার অধিকার খর্ব করে, তার কোনো জিনিস অন্যায়ভাবে গ্রহণ করে, তাকে আমি কিয়ামতের দিন তার বিপক্ষে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করব।’ — (আবু দাউদ, হাদিস: ৩০৫২)


২. সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ: রাসুলুল্লাহ (সা.) অমুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, সে যেন তার প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।’ — (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০১৮)


এই নির্দেশনা মুসলিম ও অমুসলিম উভয় প্রতিবেশীর জন্য প্রযোজ্য।


৩. ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ: ইসলাম অন্য ধর্মের অনুসারীদের তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা দিয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সময়ে খ্রিস্টান, ইহুদি এবং অন্যান্য ধর্মের লোকদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রেখেছিলেন। মদিনার সনদে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।


৪. সহমর্মিতা ও সাহায্য: অমুসলিমদের প্রতি সহমর্মিতা প্রদর্শন ও সাহায্য করার নির্দেশ হাদিসে পাওয়া যায়। আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একজন মানুষ মুমিন নয়, যদি সে তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকা অবস্থায় নিজে তৃপ্ত থাকে।’ — (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৫)


৫. অন্যের অনুভূতিকে সম্মান করা: অমুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাস বা তাদের দেব-দেবতাদের প্রতি অসম্মানজনক কথা বলা বা আচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে বলা আছে, ‘তোমরা তাদের (অমুসলিমদের) উপাস্যদের গালি দিও না, যেন তারা না জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহকে গালি দেয়।’ — (সূরা আন-আম: ১০৮)


৬. যুদ্ধের সময়ও মানবিক আচরণ: যুদ্ধের সময়ও অমুসলিমদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যুদ্ধের সময় শিশু, বৃদ্ধ এবং নারীকে হত্যা কোরো না। গাছপালা ধ্বংস কোরো না।’ — (আবু দাউদ, হাদিস: ২৬১৪)



thebgbd.com/AR