মিসরের রাজধানী কায়রোতে ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রত্যয়ে একমত হন।
আলোচনায় চিনিকল শিল্প ও ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। প্রফেসর ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) পুনরুজ্জীবনের ওপর জোর দেন এবং এটি তার সরকারের পররাষ্ট্রনীতির একটি প্রধান অগ্রাধিকার বলে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, তার সরকার ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি ঐকমত্য গঠন কমিশন ইতোমধ্যে সংস্কার নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রফেসর ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ১৯৭১ সালের ঘটনাবলীর নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এই অধ্যায় আমাদের সম্পর্কের পথে বাধা সৃষ্টি করে। এগুলো সমাধান করে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করা জরুরি।’
জবাবে শেহবাজ শরিফ ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের চিনিকলগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি, ডেঙ্গু মোকাবিলায় তাদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করার জন্য একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘পাঞ্জাবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমাদের প্রচেষ্টাকে বিশ্বমানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। আমরা এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করতে প্রস্তুত।’
প্রফেসর ইউনূস প্রস্তাবিত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এই উদ্যোগগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এবং ড. ইউনূসের বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। লুতফে সিদ্দিকী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা তিনি গ্রহণ করেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ প্রফেসর ইউনূসকে সুবিধাজনক সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান। এই বৈঠক বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
thebgbd.com/AR