শীতকাল বা শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে অনেকের পা ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এটি শুধু অস্বস্তির কারণ নয়, বরং ব্যথা বা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ায়। পা ফাটা থেকে মুক্তি পেতে কিছু সঠিক যত্ন এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পা ফাটার অন্যতম কারণ হলো ত্বকের আর্দ্রতার অভাব। এছাড়া শুষ্ক আবহাওয়া, খালি পায়ে চলাফেরা, দীর্ঘসময় ধরে পানি বা রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে থাকা, ভিটামিনের অভাব, বিশেষত ভিটামিন এ, সি ও ই এবং ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডজনিত সমস্যার কারণেও পা ফাটতে পারে।
পা ফাটা রোধে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
১. পায়ের আর্দ্রতা বজায় রাখা: ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. আরিফ হোসেন বলেন, ‘পায়ের ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লাগালে পায়ের ত্বক নরম থাকে এবং ফাটার সম্ভাবনা কমে যায়।
এক্ষেত্রে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করতে পারেন। আর ঘুমানোর আগে পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে মোজা পরুন।
২. পায়ের নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: ত্বকের যত্ন বিশেষজ্ঞ ডা. সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘পায়ের যত্নে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অপরিহার্য। গরম পানিতে পা ভিজিয়ে স্ক্রাবিং করলে মৃত কোষ উঠে যায় এবং ত্বক মসৃণ হয়।
এক্ষেত্রে গরম পানিতে লবণ ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পা ১০-১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। পিউমিস স্টোন দিয়ে হালকাভাবে স্ক্রাব করুন।
৩. পা ফাটার চিকিৎসায় প্রাকৃতিক উপাদান: প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। কিছু ঘরোয়া সমাধান:
শসার প্যাক: শসার রস পায়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক শীতল ও মসৃণ রাখে।
মধু: পা ফাটা সারাতে মধু অত্যন্ত কার্যকর। এক কাপ গরম পানিতে আধা কাপ মধু মিশিয়ে পা ভিজিয়ে রাখুন।
অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা জেল পায়ের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন।
৪. সঠিক জুতা পরা: অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘খুব টাইট বা অনুপযুক্ত জুতা পা ফাটার সমস্যা বাড়াতে পারে। তাই আরামদায়ক এবং সঠিক আকারের জুতা পরতে হবে।
৫. ভিটামিন ও পুষ্টি: ভিটামিনের অভাব পা ফাটার অন্যতম কারণ। খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, সি ও ই যুক্ত করুন। শাকসবজি, ফলমূল, দুধ এবং বাদাম খান।
পা ফাটার সমস্যা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় নিয়মিত যত্ন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ত্বককে মসৃণ ও সুস্থ রাখতে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া উপদেশ মেনে চলুন এবং ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করুন। সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।