ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৯ দফা দাবি এবং নেতৃত্বের ভূমিকা

আন্দোলনের অন্যতম অভিনব কর্মসূচি ছিল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ এবং ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’, যা দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে সংহত করেছিল।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
৯ দফা দাবি এবং নেতৃত্বের ভূমিকা সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েমের এক স্মৃতিচারণমূলক মতামতে উঠে এসেছে ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ। সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাপ্রথার বিরুদ্ধে এই আন্দোলন ছিল দেশের ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য গণঅভ্যুত্থান।


সাদিক কায়েম তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থা দেশের যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৮ সালের ব্যাপক আন্দোলনের পর কোটা বাতিল হলেও ২০২৪ সালে সরকার হঠাৎ করে এই বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে।


এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্রসমাজ বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামেন। ইসলামী ছাত্রশিবির এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কৌশলগত সমন্বয় এবং মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


সাদিক কায়েম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের প্রতীক। সরকারের দমন-পীড়ন, গণহত্যা, এবং গণগ্রেপ্তার সত্ত্বেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে গেছি।


৯ দফা দাবি এবং নেতৃত্বের ভূমিকা


এই আন্দোলনের একটি বড় অর্জন ছিল ৯ দফা দাবি উত্থাপন। ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ, বিশেষত কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম ও ঢাবি শাখার নেতৃবৃন্দ মিলে এই দাবি প্রণয়ন করেন। আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রশিবিরের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করা, আন্দোলনের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দেন।


প্রতিরোধ ও ঐক্যবদ্ধ অভিযান


২০১৮ সালের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের’ মতো, এই আন্দোলনও সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা এবং ছাত্রনেতাদের ত্যাগের ওপর ভিত্তি করে গণমানুষের সমর্থন আদায় করে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা ছাত্রদের অংশগ্রহণ আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।


আন্দোলনের অন্যতম অভিনব কর্মসূচি ছিল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ এবং ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’, যা দেশব্যাপী সাধারণ মানুষকে আন্দোলনে সংহত করেছিল।


সরকারের পতন এবং নতুন সূচনা


সাদিক কায়েমের ভাষ্যমতে, এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সরকারের পতন ঘটে এবং দেশে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তিনি বলেন, “নতুন সরকার গঠনের জন্য ড. ইউনূসকে অনুরোধ জানানো হয়, যা শহীদদের ত্যাগের প্রতীক হিসেবে গণমানুষের আশা পূরণের একটি পদক্ষেপ ছিল।”


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা


সাদিক কায়েম এবং ছাত্রশিবিরের নেতারা শহীদদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। তার মতে, এ আন্দোলনের শিক্ষা দেশের প্রতিটি স্তরে ন্যায্যতা, মানবাধিকার, এবং সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাবে।


এ আন্দোলন শুধু ইতিহাসের অংশ নয়, এটি একটি প্রজন্মের জন্য প্রেরণা এবং পরিবর্তনের সূচনা।



thebgbd.com/AR