কোরআন ও হাদিসে রাতে ইবাদত, দোয়া এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনার বিশেষ গুরুত্ব সম্পর্কে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। রাতে করা এই ইবাদত ও আমলগুলো মানুষের আত্মিক উন্নতি এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অনন্য সুযোগ।
রাতের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো:
১. তাহাজ্জুদ নামাজ: তাহাজ্জুদ নামাজ ইসলামের অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি ইবাদত। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে পৃথক থাকে; তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সূরা সিজদা: ১৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ মুমিনের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। এটি এমন একটি ইবাদত যা বান্দাকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়।’ (মুসলিম)
২. ইস্তিগফার ও তওবা: রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারা রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (সূরা আলে ইমরান: ১৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহর কাছে তওবা করে, আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন।’ (বুখারি)
৩. কোরআন তিলাওয়াত: রাতে কোরআন তিলাওয়াত করলে তা হৃদয়কে প্রশান্তি দেয়। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় রাতের ইবাদত মনকে স্থির করে এবং বাক্য স্পষ্ট করে।’ (সূরা মুজাম্মিল: ৬)
৪. দোয়া ও প্রার্থনা: রাতের শেষ প্রহর হলো দোয়া কবুলের উত্তম সময়। হাদিসে এসেছে, ‘রাতের শেষ ভাগে আল্লাহ পৃথিবীর আসমানে নেমে এসে বলেন, ‘কোনো প্রার্থনাকারী আছ কি, যার দোয়া আমি কবুল করব? কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি, যার তওবা আমি গ্রহণ করব?’ (বুখারি ও মুসলিম)
৫. যিকর ও আল্লাহর স্মরণ: রাতে আল্লাহর প্রশংসা ও স্মরণ করতে বলা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতে আল্লাহর যিকর করে, তার জন্য জান্নাতে একটি বিশেষ মর্যাদা প্রস্তুত করা হয়।’ (তিরমিজি)
রাতের সময়টি ইবাদতের জন্য সেরা একটি সময়। এটি আমাদের গুনাহ মাফের সুযোগ এনে দেয় এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভের একটি অনন্য সুযোগ। আমাদের উচিত, এই মূল্যবান সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।
thebgbd.com/AR