ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইরাকে ১০০ কুর্দি নারী ও শিশুর লাশসহ গণকবরের সন্ধান

লাশগুলো নারী ও শিশুদের। এদের সকলের পরনে কুর্দি বাসন্তী পোশাক বয়েছে। লাশ উত্তোলনের চেষ্টা চলছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
ইরাকে ১০০ কুর্দি নারী ও শিশুর লাশসহ গণকবরের সন্ধান গণকবরে ১০০ কুর্দি নারী ও শিশুর লাশের সন্ধান পাওয়া যায়।

দক্ষিণ ইরাকের মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়া এলাকায় কুর্দি নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০০ জনের দেহাবশেষসহ একটি গণকবরের সন্ধান মিলেছে। ইরাকের তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ইরাকের তা’ল আল-শাইখিয়া থেকে এএফপি জানায়, ইরাকের তিন কর্মকর্তা বলেছেন, ধারণা করা হচ্ছে ১৯৮০ এর দশকে সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের আমলে এদের হত্যা করা হয়েছে।


এএফপির একজন সাংবাদিক বলেছেন, গণকবরটি দক্ষিণ ইরাকের মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়াতে আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি সেখানকার প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার (১০-১২ মাইল) দূরে অবস্থিত। ইরাকি কর্তৃপক্ষের প্রধান দিয়া করিম বলেছেন, ২০১৯ সালে প্রাথমিকভাবে সন্ধান পাওয়া পর একটি বিশেষজ্ঞ দল এই মাসের শুরুতে কবরটি খননের কাজ শুরু করে। এরপর এই স্থানে এটি দ্বিতীয় গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেল।


দিয়া করিম বলেন, ‘মাটির প্রথম স্তর অপসারণ করার পর এ গণকবরটি আবিষ্কৃত হয়। এখানকার লাশগুলো নারী ও শিশুদের। এদের সকলের পরনে কুর্দি বাসন্তী পোশাক বয়েছে। লাশ উত্তোলনের চেষ্টা চলছে। সংখ্যার হেরফের হতে পারে।’


১৯৮০-এর দশকে ইরানের সঙ্গে মারাত্মক যুদ্ধের পর, সাদ্দামের সরকার ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে কুর্দি অধ্যুসিত এলাকায় নির্মম দমন অভিযান চালায় যা ’আনফাল অপারেশন’ নামে পরিচিত। ওই সেনা অভিযানে প্রায় ১৮০,০০০ কুর্দিকে হত্যা করা হয় বলে মনে করা হয়। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর সাদ্দামকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং আনফাল অভিযানে গণহত্যার অভিযোগে সাদ্দামকে অভিযুক্ত করে তিন বছর পর তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।


করিম বলেন, কবরে পাওয়া বিপুল লাশের অনেককে খুব কাছ থেকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে কয়েকজনকে জীবিত কবর দেওয়া হতে পারে, কারণ তাদের দেহাবশেষে গুলির কোনো চিহ্ন নেই। ইরাকের গণকবরের জন্য খননকারী দলের প্রধান আহমেদ কুসাই বলেন, ’আমরা এই কবর খননে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। হত্যা সময় মায়েরা তাদের সন্তানদের বুকে আঁকড়ে রাখায় লাশগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা জড়ানো।’


গণকবর উত্তোলনের জন্য কর্তৃপক্ষের অংশ দুরগাম কামেল জানায়, তারা তা’ল আল-শাইখিয়াতে লাশ উত্তোলন শুরু করার একই সময়ে আরেকটি গণকবর পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, গণকবরটি নুগ্রাত আল-সালমান কারাগারের কাছে অবস্থিত। এখানে সাদ্দামের কর্তৃপক্ষ ভিন্নমতাবলম্বীদের আটকে রাখতেন। ইরাকি সরকার জানায়, ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সাদ্দামের অধীনে সংঘটিত নৃশংসতা এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় প্রায় ১৩ লাখ মানুষ নিখোঁজ হয়।


সূত্র: এএফপি


এসজেড