ঢাকা | বঙ্গাব্দ

জুমার খুতবা শোনার ফজিলত

জুমার নামাজ এবং খুতবার গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫
জুমার খুতবা শোনার ফজিলত ফাইল ছবি

জুমার খুতবা মুসলিম জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, যা নামাজের অপরিহার্য অংশ। খুতবা শুধু নামাজের আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি দ্বীনের জ্ঞান অর্জন, আত্মশুদ্ধি এবং ইসলামী শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। জুমার নামাজ এবং খুতবার গুরুত্ব কোরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।


কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ কর। এটি তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা আল-জুমু'আহ, আয়াত ৯)


এই আয়াতে ‘আল্লাহর স্মরণ’ বলতে জুমার খুতবাকেও বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, খুতবার সময় সমস্ত কাজকর্ম ছেড়ে উপস্থিত হওয়া এবং মনোযোগ দিয়ে শোনা।


খুতবা শোনার ফজিলত হাদিসে


রাসুলুল্লাহ (সা.) জুমার খুতবার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হাদিস হলো:


রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসময়ে মসজিদে আসে, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে চুপচাপ বসে খুতবা শোনে এবং কোনো ধরনের অনর্থক কাজ বা কথা বলে না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের রোজা ও নামাজের সমান সওয়াব লেখা হয়।’ (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)


অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন খুতবার সময় কথা বলে, সে যেন অনর্থক কাজ করল। এবং যে ব্যক্তি অনর্থক কাজ করল, তার জুমা অকার্যকর হয়ে গেল।’  (আবু দাউদ, তিরমিজি)


হজরত সালমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে, পবিত্রতা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে বা ঘরে সুগন্ধি লাগায়, তারপর মসজিদে এসে (খুতবা ও নামাজে) মনোযোগ দিয়ে অংশ নেয়, তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি)


খুতবা মানুষকে ইসলামের মূলনীতি, আখলাক ও আমলের শিক্ষা দেয়। ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য মুসলিমদের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানে দিকনির্দেশনা প্রদান করে। খুতবার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং ইসলামের সামষ্টিক মূল্যবোধ বজায় রাখে।


খুতবা শোনার আদব

খুতবা শুরু হওয়ার আগেই মসজিদে উপস্থিত হওয়া।

পুরো খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা।

খুতবার সময় অন্য কোনো কাজে মনোযোগ না দেওয়া, যেমন কথা বলা, মোবাইল ব্যবহার করা বা এদিক-সেদিক তাকানো।


জুমার খুতবা কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি আল্লাহর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ ও শিক্ষার মাধ্যম। এটি মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং তার ওপর আমল করা প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব।


thebgbd.com/NIT