ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গর্ভাবস্থায় করণীয়

গর্ভাবস্থা একটি নারীর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়।
  • | ০৩ জানুয়ারি, ২০২৫
গর্ভাবস্থায় করণীয় গর্ভাবস্থায় করণীয়

গর্ভাবস্থা একটি নারীর জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় শরীর ও মন উভয়েই নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। সঠিক যত্ন এবং নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ না মেনে চললে মা এবং গর্ভস্থ সন্তানের উভয়ের জন্য ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে। চিকিৎসকরা এই সময়টিতে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।


পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ


গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসকরা জানান, এই সময় মায়ের খাদ্যাভ্যাস সন্তানের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে বড় ভূমিকা রাখে।


প্রোটিন: গর্ভাবস্থার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন থাকা উচিত। মাছ, ডিম, মাংস, ডাল এবং দুধ প্রোটিনের প্রধান উৎস।


ফল ও সবজি: ভিটামিন ও খনিজের জন্য প্রতিদিন প্রচুর ফল এবং সবজি খাওয়া উচিত। এটি গর্ভস্থ শিশুর সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।


ফোলিক অ্যাসিড: গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বিশেষ করে ফোলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের গঠন সুস্থভাবে সম্পন্ন করে।


চিকিৎসকরা বলেন, অতিরিক্ত মশলাদার বা তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এগুলো বদহজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।


নিয়মিত চিকিৎসা পরামর্শ গ্রহণ


গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য।


প্রসব পূর্ব পরীক্ষা: চিকিৎসকরা জানান, প্রতি মাসে অন্তত একবার প্রসব-পূর্ব চেকআপ করানো উচিত। এতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।


আল্ট্রাসনোগ্রাফি: নির্দিষ্ট সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে সন্তানের শারীরিক বৃদ্ধি ও অবস্থান পরীক্ষা করা হয়।


রক্ত পরীক্ষার গুরুত্ব: গর্ভাবস্থায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ জরুরি। রক্তস্বল্পতা থাকলে তা দ্রুত নিরসন করতে হবে।


মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন


গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকরা বলেন, মা যদি মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন, তবে গর্ভস্থ শিশুর বিকাশও ভালোভাবে সম্পন্ন হয়।


যোগব্যায়াম এবং মেডিটেশন মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। পরিবারের সমর্থন ও ভালোবাসা গর্ভাবস্থার মানসিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক।


পর্যাপ্ত বিশ্রাম


চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো উচিত। গর্ভাবস্থায় কাজের চাপ কমিয়ে যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়া জরুরি।


হালকা ব্যায়াম


গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকদের নির্দেশনায় হালকা ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা এবং সহজ যোগব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং প্রসবকে সহজ করে।


পানি পান


গর্ভাবস্থায় দেহে পানির চাহিদা বেশি থাকে। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।


ওষুধ ও ভ্যাকসিন


চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। নির্দিষ্ট সময়ে টিটেনাস ভ্যাকসিন নেওয়া আবশ্যক।


গর্ভাবস্থার প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে পালন করলে মা এবং শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত হয়। চিকিৎসকরা সবসময় গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার প্রতি সচেতন থাকতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।