সিডনি টেস্ট শুরুর আগে গ্লেন ম্যাকগ্রা বলেন, যশপ্রীত বুমরা না থাকলে সিরিজটি কিছুটা একতরফা হয়ে যেতে পারত। আজ রোববার সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিনে ম্যাকগ্রার কথাগুলো বারবার ফিরে এসেছিল। চোটের কারণে বুমরা তৃতীয় দিনে বল করতে পারেননি, যার ফলে চতুর্থ ইনিংসে ১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত অস্ট্রেলিয়াকে বড় কোনো চ্যালেঞ্জ দিতে পারেনি। প্রথমদিকে কিছুটা দোটানা হলেও, শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।
এদিকে, ৬ উইকেটে সিডনি টেস্ট জিতে ১০ বছর পর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি পুনরুদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়া। এর পাশাপাশি, প্যাট কামিন্সের দল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জুনের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। টানা চারবার এই ট্রফি জেতা ভারত এবার ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ হারানোর পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নশিপ থেকেও বিদায় নিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া যখন ৫৮ রান তুলতেই তিনটি উইকেট হারিয়ে ফেলে, তখন ভারত ছিল আশা জাগানো অবস্থায়। প্রসিধ কৃষ্ণা একাই স্যাম কনস্টাস, মারনাস লাবুশেন এবং স্টিভেন স্মিথকে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু বুমরার অনুপস্থিতি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ কিছুটা কমিয়ে দেয়। পুরো সিরিজে প্রতিটি ম্যাচে বুমরা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছিলেন। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি একাই ৩২ উইকেট নিয়েছিলেন, যেখানে ভারতের আর কোনো বোলার ২০ উইকেটও নিতে পারেনি।
বুমরার চোটের কারণে তিনি আর বোলিংয়ে ফিরে আসতে পারেননি। আজ সকালে ব্যাটিংয়ের পর মাঠে ফিল্ডিং করতে নামেননি। তবে কৃষ্ণা এবং মোহাম্মদ সিরাজ যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তবে উসমান খাজা ও ট্রাভিস হেডের চতুর্থ উইকেট জুটি ৪৪ রানের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপে অস্ট্রেলিয়াকে জয় পেতে সহায়তা করে। পরবর্তীতে ওয়েবস্টারের সাথে জুটি বেঁধে হেড দলের জয় নিশ্চিত করেন।
ওয়েবস্টারের অবদান ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা এই অলরাউন্ডার ৩৪ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন, এবং ওয়াশিংটন সুন্দরকে মারেন একটি বাউন্ডারি, যা অস্ট্রেলিয়ার জয়ের রানও এনে দেয়। হেড অপরাজিত ছিলেন ৩৪ বলে।
দিন শেষে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান স্কট বোল্যান্ড। ভারতের বাকি ৪ উইকেট যে খুব দ্রুত পড়ে যায়, তার পেছনে মূল অবদান ছিল বোল্যান্ডের। হ্যাজলউডের বদলে তৃতীয়বার মাঠে নেমে বোল্যান্ড ৪৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ভারতের ইনিংস শেষ করে দেন।
সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বুমরা হলেও সিরিজসেরা হিসেবে বিবেচিত হন। তবে দিনের শেষে বড় জয় অস্ট্রেলিয়ার। ২০১৪-১৫ মৌসুমের পর এবারই প্রথম তারা বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জয় করল, এবং এই জয়ের ফলে কামিন্সদের দল টানা দ্বিতীয়বার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে স্থান পেয়েছে।
জুনে লর্ডসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। গতবার ফাইনাল খেলা ভারত এবার এই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় নিয়েছে, এবং চারটি আসরের পর বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি হারিয়েছে।
thebgbd.com/NIT