গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে অসত্য ও বিকৃত তথ্য প্রচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফারাজকে একজন ‘সাহসী তরুণ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি প্রথম আলোর অপরাধ বিষয়ক বিটের সাবেক সাংবাদিক আহমেদ জায়েফের একটি ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। তার পোস্টে তিনি বলেন, গুলশানের হোলি আর্টিজানের হামলায় নিহত ফারাজ ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রথম আলোর মালিক লতিফুর রহমানের নাতি। প্রথম আলো ফারাজকে ‘বিপদে বন্ধুর পরিচয় দেয়া’ এক সাহসী তরুণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভিন্ন সংবাদ, কলাম এবং স্মৃতিচারণমূলক লেখা প্রকাশ করে আসছে।
ফারাজের সাহসিকতার প্রচারের ভিত্তি ২০১৬ সালের ২ জুলাই নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জঙ্গিরা মুসলিম হওয়ায় ফারাজকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তিনি বন্ধুদের ছেড়ে আসতে চাননি। তবে আহমেদ জায়েফ জানান, ওই প্রতিবেদনের তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই।
তিনি উল্লেখ করেন, জঙ্গিরা হামলার পরপরই হত্যাকাণ্ড চালায় এবং সকাল পর্যন্ত কেউ জীবিত ছিলেন না। জিম্মি দশা থেকে বেঁচে ফেরা ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারে এমন কোনো ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়নি। পুলিশের তদন্তেও এ ধরনের কোনো প্রমাণ মেলেনি। পুরো বিষয়টি প্রথম আলো কলাম, মতামত এবং স্মৃতিচারণের মাধ্যমে প্রচার করেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
হোলি আর্টিজানের ঘটনা নিয়ে লেখা বইয়ের লেখক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক নুরুজ্জামান লাবু জানান, তার বইয়ের রেফারেন্স নিয়ে ভারত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করলেও বইয়ে ফারাজের এ ধরনের সাহসিকতার কোনো উল্লেখ নেই। তদন্ত নথি, আদালতের চার্জশিট, কিংবা প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানেও এমন কোনো ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অবিন্তা কবিরের মা রুবা আহমেদ এই প্রচারণাকে ভিত্তিহীন ও অসত্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ফারাজকে হিরো বানানোর ঘটনা বাস্তবতার সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান। যারা এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তারাই প্রকৃত হিরো।
উল্লেখ্য, হামলার পরপরই ফারাজের জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিতর্ক ও একটি জঙ্গির সঙ্গে তার বন্ধুত্বপূর্ণ ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তোলে।
thebgbd.com/NA