ঢাকা | বঙ্গাব্দ

তৈলাক্ত খাবারের অপকারিতা

তৈলাক্ত খাবার স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
  • | ১০ জানুয়ারি, ২০২৫
তৈলাক্ত খাবারের অপকারিতা তৈলাক্ত খাবারের অপকারিতা

তৈলাক্ত খাবার স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এ ধরনের খাবারে সাধারণত উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে রক্তনালীতে চর্বি জমে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।


তৈলাক্ত খাবার ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে সঞ্চিত হয়ে মেদ জমার প্রবণতা বাড়ায়। বিশেষ করে পেট ও কোমরের চারপাশে মেদ জমলে তা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য বিপাকীয় রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।


এ ধরনের খাবার হজমপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়। অতিরিক্ত তেল খাবারের পর পেটে অস্বস্তি, বদহজম, অ্যাসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তৈলাক্ত খাবার পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা হ্রাস করে, ফলে দীর্ঘ সময় ধরে খাবার হজম হয় না।


তৈলাক্ত খাবার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। নিয়মিত এ ধরনের খাবার গ্রহণ করলে ব্রণ, ত্বকের তৈলাক্ত ভাব এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার প্রকোপ বাড়ে। ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা হারায় এবং বয়সের আগেই বলিরেখা দেখা দিতে পারে।


এছাড়াও, তৈলাক্ত খাবার লিভারের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ফ্যাট লিভারে জমে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে লিভারের কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে।


তৈলাক্ত খাবার রক্তচাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ট্রান্স ফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বাড়িয়ে দেয় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) কমিয়ে দেয়। এতে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।


তৈলাক্ত খাবার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে এবং চিন্তা-ভাবনার ক্ষমতা কমায়।


সামগ্রিকভাবে, তৈলাক্ত খাবারের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে এবং দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগের কারণ হতে পারে। তাই সুস্থ থাকার জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এবং তৈলাক্ত খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করা উচিত।