ইসলামিক বিশ্বে নারীশিক্ষা বিষয়ক বিশ্বব্যাপী এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে এখন পাকিস্তানে অবস্থান করছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। শনিবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলন কেন্দ্র পৌঁছে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে সত্যিই সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।’ ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবর।
২০১২ সালে স্কুলছাত্রী মালালাকে পাকিস্তানি তালেবানরা গুলি করে। উচ্চ চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়, তারপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর মাত্র কয়েকবার তিনি নিজ দেশে এসেছেন, তবে তার সবগুলো সফরই ছিল আংশিক এবং সংক্ষিপ্ত।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ দুই দিনব্যাপী এ শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধন করেছেন। এতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়েছেন। মুসলিম দেশগুলোর লাখ লাখ মেয়ে স্কুলে যায় না। রোববার (১২ জানুয়ারি) ইউসুফজাইয়ের সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তিনি বলেন, ‘সকল মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলবো। আফগান নারী ও মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য কেন তালেবানদের নেতাদের জবাবদিহি করতে হবে-সে ব্যাপারেও বলবো।
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী এএফপিকে বলেছেন, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এ সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে তালেবানের পক্ষ থেকে ইসলামাবাদের এ আমন্ত্রণে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে মেয়ে ও নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেতে বাধা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানে কঠোরভাবে ইসলামী আইন আরোপ করেছে। জাতিসংঘ একে ‘লিঙ্গ বর্ণবাদ’ বলে অভিহিত করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান তীব্র শিক্ষা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটিতে ২ কোটি ৬০ লাখের বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে। এদের অধিকাংশই দারিদ্র্যের কারণে স্কুলে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
২০১২ সালে প্রত্যন্ত সোয়াত উপত্যকায় একটি স্কুল বাসে পাকিস্তান তালেবান জঙ্গিদের হামলার পর ইউসুফজাই বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন। এরপর তাকে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তিনি নারী শিক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী একজন প্রবক্তা হয়ে ওঠেন এবং ১৭ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী হন।
সূত্র: ডন
এসজেড