পঞ্চম বছরের মতো জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। যা চলবে রহনপুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত। শনিবার (১১ মে) রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে রেলযোগে আম পরিবহনের সমস্যা ও করণীয় বিষয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে রেলমন্ত্রী অংশ নিয়ে আম উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সব স্টেক হোল্ডার ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কথা শুনেছেন। যেখানে উঠে এসেছে রেলে আম পরিবহনের নানা সমস্যা ও ভোগান্তির কথা। এই ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনকে কীভাবে আরও কার্যকরী করা যায় তা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মো. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর ছাড়াও বিভাগের তিন জেলার জেলা প্রশাসক, রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২০ সালে শুরু হওয়া শুধু আম পরিবহনের জন্য ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি নানা কারণে। তাই এর পেছনের কারণ খুঁজতেই সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের এই সেমিনার।
স্বল্প খরচেও ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে আম পরিবহন করে মোটেও সন্তুষ্ট নয় সাধারণ আমচাষি ও আম ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বিলম্বিত ট্রেন চলাচল, মালামাল রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও কুরিয়ারের মতো পণ্য প্রাপ্তির সুযোগ সুবিধা না থাকা এর জন্য দায়ী।
অন্যদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম অসীম কুমার তালুকদার বলছেন, এবার স্পেশাল ট্রেন ছাড়াও প্রতিটি ট্রেনেই সাধারণ অথবা এসি লাগেজ ভ্যান থাকবে। ফলে আম পরিবহন আরও সহজ হবে।
সবার কথা শুনে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে না নিতে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, প্রক্রিয়াটি আরও সহজ করতে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর সঙ্গে একটা কন্ট্রাক্ট করা হতে পারে। সমস্যা একটু থাকবেই। সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সেমিনারে জানানো হয়েছে, ছয়টি লাগেজ ভ্যানের মাধ্যমে আম পরিবহন করা যাবে ২৮ দশমিক ৮৩ টন। তবে এবার ট্রেন যাবে পদ্মা সেতু হয়ে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্টেশন থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টায় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে এই ট্রেন।
যাত্রা পথে রহনপুর স্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, আব্দুলপুর, ঈশ্বরদী, পোড়াদহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা স্টেশনসহ মোট ১৫টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন। এই ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ২টা ১৫ মিনিটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি আম পরিবহনে ভাড়া লাগবে ১ টাকা ৪৭ পয়সা, রাজশাহী থেকে ১ টাকা ৪৩ পয়সা, পোড়াদহ থেকে ১ টাকা ১৯ পয়সা, রাজবাড়ী থেকে ১ টাকা ৭ পয়সা, ফরিদপুর থেকে ১ টাকা ১ পয়সা এবং ভাঙ্গা থেকে ৯৮ পয়সা।
২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চার বছরে ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে মোট ৩৯ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৮ কেজি আম পরিবহণ করা হয়। যেখানে রেলের রাজস্ব অর্জিত হয় মাত্র৪৬ লাখ ২৯ হাজার ১৪০ টাকা।