ঢাকা | বঙ্গাব্দ

এবার ফাঁসছেন সেই ডিসি-এসপিরা

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুদক আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫
এবার ফাঁসছেন সেই ডিসি-এসপিরা ছবি : সংগৃহীত।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্বাচনে ক্ষমতার অপব্যবহার, দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করা, জালিয়াতি এবং আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের তদন্ত করা হবে।


রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্থার মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।


২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদলগুলোর অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলমান। তাদের ভাষায়, এটি "নিশিরাতের নির্বাচন" হিসেবে পরিচিত। অভিযোগে বলা হয়, দিনের ভোট আগের রাতে সম্পন্ন করা হয়েছে, কিছু কিছু কেন্দ্রে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট দেখানো হয়েছে, এবং ব্যালট জালিয়াতি করা হয়েছে। দুদকের প্রাপ্ত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয় যে আওয়ামী লীগের নেতাদের সহযোগিতায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা এই অনিয়মে জড়িত ছিলেন। প্রিসাইডিং অফিসার এবং সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারদের বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।


২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে যায়। এতে ব্যালট পেপার, ব্যালটের মুড়ি, এবং নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন তথ্য ধ্বংস হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে যে নির্বাচনে অনিয়মের প্রমাণ মুছে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।


৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ভূমিকা এই অনুসন্ধানের আওতায় আসবে। অভিযোগে দাবি করা হয় যে অনেক ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারদের স্বাক্ষর ছাড়াই ব্যালট পেপারে সিল মেরে আগেই বক্সে ভরে রাখা হয়েছিল। নওগাঁর একটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা এক মাদরাসা শিক্ষক এই প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যা করা হয় এবং ঘটনাটিকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রচার করা হয়।


২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করা হয়। এর ফলে ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধীদলগুলোর অভিযোগ আরও জোরালো হয়। নির্বাচনের ফলাফলে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৫৭টি আসনে জয়ী হলেও বিরোধীদলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাত্র সাতটি আসন পায়।


দুদক এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে নির্বাচনের সময়কার অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সত্যতা যাচাই করবে। অভিযোগের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে অনুসন্ধান দল প্রতিবেদন জমা দেবে।


thebgbd.com/NA