ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইজতেমায় অংশ নিলে বিশেষ কোনো সওয়াব হয়?

বিশ্ব ইজতেমা পালনের মাধ্যমে বিশেষ সওয়াব লাভ করা যায় বলে আলেম-ওলামারা মনে করেন।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
ইজতেমায় অংশ নিলে বিশেষ কোনো সওয়াব হয়? ছবি : সংগৃহীত।

বিশ্ব ইজতেমা পালনের মাধ্যমে বিশেষ সওয়াব লাভ করা যায় বলে আলেম-ওলামারা মনে করেন। ইসলামে যে কোনো নেক কাজের জন্য আল্লাহ বিশেষ পুরস্কার নির্ধারণ করেছেন, আর বিশ্ব ইজতেমার মতো বৃহৎ দ্বীনি জমায়েতে অংশগ্রহণ করা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত সওয়াবের কাজ।  


ইজতেমায় যোগদান করে কুরআন-হাদিসের আলোচনা শোনা, তাসবিহ-তাহলিল করা, দোয়া-মোনাজাতে অংশ নেওয়া এবং দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফজিলতপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো দ্বীনি মজলিসে বসে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের পথ সহজ করে দেন” (সহিহ মুসলিম)। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীরা কয়েক দিন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়ার ব্যস্ততা ছেড়ে দ্বীনের পথে থাকেন, যা তাদের জন্য বিশেষ রহমতের মাধ্যম।  


হাদিস অনুযায়ী, যেখানে আল্লাহর জিকির হয়, সেখানে ফেরেশতারা নেমে আসেন এবং সেই মজলিসে উপস্থিত সবাই আল্লাহর রহমত লাভ করেন (তিরমিজি, আবু দাউদ)। বিশ্ব ইজতেমার মতো বড় পরিসরের জমায়েত, যেখানে লাখো মানুষ আল্লাহর জিকির ও দোয়া-মোনাজাতে মগ্ন থাকে, সেখানে আল্লাহর বিশেষ রহমত বর্ষিত হয় বলে আলেমরা মনে করেন।  


এছাড়া, বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন, যা সম্মিলিত ইবাদতের বিশেষ ফজিলত অর্জনের সুযোগ করে দেয়। বিশেষ করে জুমার নামাজ, তাহাজ্জুদ ও আখেরি মোনাজাতের মুহূর্তগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এ সময় আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত চাওয়ার সুযোগ থাকে। হাদিসে এসেছে, “যখন কোনো বান্দা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন” (তিরমিজি)।  


বিশ্ব ইজতেমা কেবল ব্যক্তিগত ইবাদতের জায়গা নয়, এটি দ্বীনের দাওয়াত ও প্রচারের একটি বড় মাধ্যম। যারা এখানে আসেন, তারা ইসলামের শিক্ষা নিয়ে নিজেদের এলাকায় ফিরে যান এবং অন্যদেরকেও দ্বীনের পথে আসার আহ্বান জানান। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি অন্যকে ভালো কাজের দাওয়াত দেয়, সে নিজেও সমপরিমাণ সওয়াব পায়” (সহিহ মুসলিম)। তাই ইজতেমায় অংশগ্রহণ করা শুধু নিজের জন্য নয়, বরং অন্যদের হেদায়েতের কারণ হওয়ায় আরও বেশি সওয়াবের কাজ।  


বিশ্ব ইজতেমায় অসংখ্য মানুষ একত্রিত হয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়, যা মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণ কামনার এক অনন্য সুযোগ। হাদিসে এসেছে, “যখন অনেক মানুষ একসঙ্গে আল্লাহর কাছে দোয়া করে, আল্লাহ তাদের দোয়া কবুল করেন” (বুখারি, মুসলিম)। তাই ইজতেমার মোনাজাতে অংশ নেওয়া বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বলে আলেমরা মত প্রকাশ করেছেন।  


বিশ্ব ইজতেমা কষ্ট স্বীকারেরও একটি মাধ্যম, কারণ এখানে এসে মুসল্লিরা সাধারণ জীবনযাপন করেন, যা ইসলামের ত্যাগের শিক্ষার একটি অনুশীলন। নবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় এক মুহূর্ত কষ্ট সহ্য করে, সে জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা লাভ করবে” (বুখারি)। ইজতেমায় অংশগ্রহণকারীরা যেসব ত্যাগ স্বীকার করেন, তা তাদের জন্য জান্নাতের পথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ তৈরি করে।  


অতএব, বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় সমাবেশ নয়, এটি সওয়াব অর্জনের এক বিরাট সুযোগ। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এখানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই দুনিয়া ও আখিরাতে বিশেষ পুরস্কারের আশা করতে পারেন।


thebgbd.com/NA