মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, একটা নতুন টেসলা গাড়ি কিনবেন তিনি। বলেছেন, তার উপদেষ্টা ও গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্কের প্রতি ‘সমর্থন’ জানাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। টেসলার বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ ও শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির ক্রমবর্ধমান দরপতনের মধ্যে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক বার্তায় এ কথা বলেন ট্রাম্প।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ইলন মাস্ক ও টেসলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন এক মার্কিন।
সময়টা ভালো যাচ্ছে না ইলন মাস্কের। তার কোম্পানি টেসলার শেয়ারের দাম হু হু করে কমছে। সোমবার (১০ মার্চ) এক ধাক্কায় দাম কমে যায় ১৫ শতাংশ। ট্রাম্পের নীতিতে হতভম্ব বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে নিজেদের বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন। এদিকে কোম্পানির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদও চলছে।
এমন অবস্থায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে টেসলার পক্ষে রীতিমতো বিজ্ঞাপন করতে নামেন ট্রাম্প। নিজস্ব সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘রিপাবলিকান, কনজারভেটিভ ও সব মহান আমেরিকানদের বলছি, ইলন মাস্ক আমাদের দেশকে সহায়তা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং অসামান্য কাজ করে দেখাচ্ছেন!।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘কিন্তু কিছু কট্টর বামপন্থি উন্মাদ আছেন, যারা অবৈধভাবে ও পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে টেসলা বয়কটের চেষ্টা চালাচ্ছেন, যেটা বিশ্বের সবচেয়ে সেরা গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম এবং ইলনের সন্তানতূল্য। তারা প্রায়ই এ ধরনের কাজ করেন, যার উদ্দেশ্য ইলনের ক্ষতি করা এবং তিনি যেসব মূল্যবোধ সমর্থন করেন, সেগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করা।’
এরপরই টেসলা গাড়ি কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল সকালে আমি একটি নতুন টেসলা কিনব, যার মাধ্যমে আমি ইলন মাস্কের প্রতি আমার আত্মবিশ্বাস ও সমর্থন দেখাব। নি:সন্দেহে তিনি একজন মহান আমেরিকান।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'তিনি (ইলন) তার অসামান্য দক্ষতার ব্যবহারে আমেরিকাকে আবারও মহান রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করছেন। কেন তার এই কাজের জন্য তিনি শাস্তি ভোগ করবেন?'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে জোরালো প্রচারণা চালান ইলন মাস্ক। শুধু তাই নয়, তার প্রচারণা দলকে মোটা অঙ্কের অনুদানও দেন তিনি। এক কথায় ট্রাম্পকে নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখেন টেসলার প্রধান। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার ফলও পেয়েছেন ইলন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় হোয়াইট হাউসে ফেরার পর তার মোট সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। তাকে নবগঠিত সরকারি দক্ষতা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান করেন ট্রাম্প। এই বিভাগের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ কমানো এবং কর্মচারী-কর্মকর্তার সংখ্যা কমানো। তবে এসব কর্মকাণ্ডের জন্য বিভাগটি বিরোধীদের প্রবল বাঁধার মুখে পড়েছে। বিক্ষোভ, আদালতের রায় ও আইনপ্রণেতাদের কাছ থেকে আসা চাপও সামলাতে।
এই পরিস্থিতিতে টেসলার বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, মাস্কের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটির ওপর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসতে পারে। এমনকি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজার থেকে নিজেদের বিনিয়োগও তুলে নিচ্ছেন। ফলে বাজারে শেয়ার বিক্রির হিড়িক শুরু হয়েছে। যার জেরে টেসলার শেয়ারদরে পতন দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে টেসলা ও ইলনের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। এদিকে ট্রাম্পের এই সমর্থনের জন্য নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মাস্ক। এখন ট্রাম্পের সমর্থনের পর টেসলা ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
thebgbd.com/NIT