ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইস্তাম্বুলের মেয়র গ্রেপ্তার

ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত সকল বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১৯ মার্চ, ২০২৫
ইস্তাম্বুলের মেয়র গ্রেপ্তার ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু।

বুধবার তুরস্কের পুলিশ ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুর্নীতির তদন্তের অভিযোগে তাকে আটক করে। প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি পার্টি এই পদক্ষেপকে ‘অভ্যুত্থান’ বলে নিন্দা জানিয়েছে। সিএইচপি’র একজন জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব, ইমামোগলু প্রেসিডেন্ট এরদোগানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য তাকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করার কয়েকদিন আগে তাকে আটক করা হয়। ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি এই খবর জানায়।


এরদোগানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে ব্যাপকভাবে দেখা যায়। ইমামোগলুর ক্যারিয়ার রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইনি মামলার ধারাবাহিকতার কারণে ম্লান হয়ে পড়েছে। ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় তার ডিগ্রি বাতিল করার কয়েক ঘন্টা পরেই পুলিশ অভিযান চালায়। তুরস্কে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। তাই এই প্রত্যাহার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।


এক্সে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে মেয়র বলেছেন, ‘আমার দরজায় শত শত পুলিশ অফিসার এসেছেন। নিজেকে জনগণের কাছে সঁপে দিচ্ছি। আমরা এই অবৈধ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে লড়াই করব। আমরা এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলব যা এই দেশের ইতিহাস থেকে অন্যায় মুছে ফেলবে।’ তিনি গত বছর তুরস্কের বৃহত্তম শহরের মেয়র হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন।


ইস্তাম্বুলের পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে ঘুষ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ইমামোগলু একটি ‘অপরাধী সংগঠনের’ নেতা এবং এই দলের ১শ’ সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


ইমামোগলুর গ্রেপ্তার ২০২৩ সালের ‘টেন্ডার জালিয়াতির’ অভিযোগের তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলুসহ স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার আটক নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) কে সহায়তা করার অভিযোগে একটি পৃথক তদন্তের সঙ্গে যুক্ত। 


সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ


নেটব্লকস ইন্টারনেট অ্যাক্সেস মনিটর জানিয়েছে, পুলিশের অভিযানের কিছুক্ষণ পরেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে অ্যাক্সেস সীমিত করা হয়। ইস্তাম্বুলের গভর্নরের কার্যালয় তাৎক্ষণিকভাবে ২৩ মার্চ পর্যন্ত সকল বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ইমামোগলুর ডিগ্রি বাতিলের বিরুদ্ধে সিএইচপি কর্তৃক বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়। 


সিএইচপি নেতা ওজগুর ওজেল ‘আমাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন। ওজেল এক্স-এ বলেছেন, ‘জনগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া, জনগণের ইচ্ছাকে প্রতিস্থাপন করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করা বা এটিকে বাধাগ্রস্ত করা একটি অভ্যুত্থান’। তিনি আরো  বলেছেন, ‘আমরা হার মানবো না। শেষ পর্যন্ত, জনগণের ইচ্ছাই জয়ী হবে এবং তুরস্কের জয় হবে।’ 


এক্সে এক বিবৃতিতে ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ইমামোগলুসহ ২৮ জনের ডিগ্রি স্পষ্ট ভুলের কারণে প্রত্যাহার এবং বাতিল করা হবে’। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেনি। ১৯৯৫ সালে ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইমামোগলুর ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ডিপ্লোমা না থাকার দাবি করার পর মেয়রের কার্যালয় তার একটি কপি প্রকাশ করে।


সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইমামোগলুর নাম একাধিক আইনি তদন্তে এসেছে, শুধুমাত্র এই বছরই তিনটি নতুন মামলা করা হয়েছে। ২০২২ সালে, ইস্তাম্বুলে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ‘অপমান’ করার জন্য তাকে দুই বছর সাত মাসের কারাদণ্ড এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। যে শাস্তির বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছেন, যার ফলাফল এখনও বিচারাধীন।


সূত্র: এএফপি


এসজেড