মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক দাতারা সাহায্য বাজেট কমিয়ে দেওয়ার ফলে ইউনিসেফ বুধবার সতর্ক করে বলেছে, এই বছর কমপক্ষে ১ কোটি ৪০ লাখ শিশু ক্ষুধার্ত এবং অপুষ্টি বা মৃত্যুর ঝুঁকির মুখে পড়বে। জাতিসংঘের শিশু সংস্থা বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জনহিতকর প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্ভিক্ষের ঢেউ ঠেকাতে তাদের শিশু পুষ্টি তহবিলে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ থেকে এএফপি আজ এ খবর জানায়।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথেরিন রাসেল বলেছেন, শতাব্দীর শুরু থেকে শিশুদের ক্ষুধা দূরীকরণে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে, তবে এই অর্জনগুলো দ্রুত হারিয়ে যেতে পারে। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সুস্থ পুষ্টি হল শিশুর বেঁচে থাকা এবং বিকাশের ভিত্তি, বিনিয়োগের ওপর চিত্তাকর্ষক রিটার্নসহ। লভ্যাংশ পরিমাপ করা হবে শক্তিশালী পরিবার, সমাজ ও দেশগুলোতে এবং আরও স্থিতিশীল বিশ্বে’।
দুই মাস আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর, তার উপদেষ্টা ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি ইউএসএইড সংস্থাটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। একজন বিচারক এই প্রচেষ্টা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও নিশ্চিত করেছেন, ইউএসএইড তার ৪২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট থেকে ৮৩ শতাংশ কর্মসূচি বাতিল করছে। ব্রিটেনের মতো অন্যান্য প্রধান দাতা দেশগুলো সম্প্রতি প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য কমিয়ে দিয়েছে বা স্থগিত করেছে।
কিন্তু রাসেল সতর্ক করে দেন, তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে এমন ২ দশমিক ৪ মিলিয়ন শিশু বছরের বাকি সময় ইউনিসেফের ‘ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত থেরাপিউটিক খাবার’ থেকে বঞ্চিত হবে। ক্ষুধার্ত শিশুদের জন্য জরুরি সেবা প্রদানকারী ২ হাজার ৩০০টি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং ইউনিসেফ-সমর্থিত ২৮ হাজারটি খাদ্য কেন্দ্রও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
রাসেল সতর্ক করে বলেছেন, সব মিলিয়ে এই বছর ১ কোটি ৪০ লাখ শিশু ‘পুষ্টি সহায়তা এবং পরিষেবায় ব্যাঘাতের সম্মুখীন হবে বলে আশা করা হচ্ছে’। রাসেল বলেছেন, ‘এই তহবিল সংকট এমন এক সময়ে এসেছে যখন শিশুদের জন্য অভূতপূর্ব চাহিদা রয়েছে, যারা রেকর্ড পরিমাণ স্থানচ্যুতি, নতুন এবং দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত, রোগের প্রাদুর্ভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে।’
সূত্র: এএফপি
এসজেড