ঢাকা | বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র সমালোচনায় জার্মান চ্যান্সেলর

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তীব্র সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ।
  • অনলাইন ডেস্ক | ২৭ মে, ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র সমালোচনায় জার্মান চ্যান্সেলর ছবি : সংগৃহীত ।

গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তীব্র সমালোচনা করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ। সোমবার বার্লিনে ডাব্লিউডিআর ইউরোপীয় ফোরামে তিনি বলেন, “গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যেভাবে বেসামরিক জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক দিনে যেটা আরও বেড়েছে, সেটাকে আর সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই হিসেবে বৈধ বলা যায় না।”


রক্ষণশীল নেতা মের্জ স্বীকার করেন, ইতিহাসের দায়বদ্ধতার কারণে জার্মানি এতদিন প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সমালোচনা করা থেকে বিরত থেকেছে। তবে এখনকার পরিস্থিতিতে তিনি আর ইসরায়েলের সামরিক উদ্দেশ্য বুঝতে পারছেন না বলে জানান। তিনি বলেন, “যখন সীমা অতিক্রম হয়, যখন সত্যিকার অর্থেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘিত হয়, তখন জার্মানি ও জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে আমার কিছু বলা প্রয়োজন।” তিনি জানান, এ সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতে এসব উদ্বেগ তুলে ধরবেন।


চ্যান্সেলর মের্জ গাজায় একটি স্কুলে ইসরায়েলি বোমা হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকেও মানবিক বিপর্যয় ও রাজনৈতিক দুর্যোগ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, “যা ঘটেছে এই সপ্তাহান্তে—গাজায় একটি কিন্ডারগার্টেনে হামলা—তা একটি মানবিক ট্র্যাজেডি এবং রাজনৈতিক বিপর্যয়।” তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে জার্মান সরকার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে।


এদিকে, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল গাজায় আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মাদ্রিদ সফরের সময় তিনি বলেন, “মানবিক অবস্থা এখন সহ্যের বাইরে এবং দ্রুতই এর উন্নয়ন ঘটানো জরুরি।” তিনি জানান, এ বিষয়ে সম্প্রতি ফোনে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে।


ওয়াডেফুল তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “লড়াই বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে কূটনৈতিক আলোচনার পথ তৈরি হতে পারে এবং একটি দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ভিত্তি গড়ে উঠতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “জার্মানির অবস্থান স্পষ্ট—সমাধান কেবল দুই রাষ্ট্রভিত্তিকই হতে পারে। গাজা থেকে কোনো রকম বিতাড়ন চলবে না, এবং খাদ্য সংকট সৃষ্টির নীতি গ্রহণযোগ্য নয়। গাজা ফিলিস্তিনিদেরই থাকবে।”


তবে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কড়া সমালোচনা করলেও ওয়াডেফুল স্পেনের প্রস্তাবিত ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইসরায়েল চুক্তি স্থগিতের আহ্বানে সমর্থন জানাননি।


জার্মানির নাৎসি অতীত থেকে উদ্ভূত ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে ওয়াডেফুল বলেন, “ইউরোপীয়দের উচিত ইসরায়েল সরকারের সঙ্গে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রাখা, কারণ বার্তা দেওয়ার জন্য এই সংলাপই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।”




thebgbd.com/NA