ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তকে খুবই উদ্বেগজনক ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ৩০ মে, ২০২৫
বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা ইসরায়েলের নতুন ইহুদি বসতি।

যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মধ্যে ইসরায়েল পশ্চিম তীরে নতুন করে বড় পরিসরে বসতি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় বসতি সম্প্রসারণ বলে সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে। ব্রিটেন ও প্রতিবেশী দেশ জর্ডান উভয়ই এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকে জাতিসংঘ নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে নিন্দা করেছে। লন্ডন এটিকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পথে ‘ইচ্ছাকৃত বাধা’ বলে অভিহিত করেছে। লন্ডন থেকে গার্ডিয়ান-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি এই খবর জানায়।


এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা  হয়েছে, ইসরায়েলি মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ২২টি নতুন ইহুদি বসতি স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ জানিয়েছেন, এসব বসতির মধ্যে অনেকগুলো আগে থেকেই সরকারি অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠে। এখন সেগুলোকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং ইসরায়েলের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।


পশ্চিম তীরে নির্মিত বসতিগুলোর বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ বলে বিবেচিত। কারণ এটি ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান বাধা হিসেবে দেখা হয়। তবে ইসরায়েল এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সবচেয়ে বিরোধপূর্ণ ইস্যুগুলোর একটি বসতি স্থাপন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাৎজ বলেছেন, নতুন বসতি তৈরি করার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনি একটি স্বাধীন দেশ গঠনের সুযোগ বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ, ফিলিস্তিনি একটি স্বাধীন দেশ গড়ে উঠলে তার কারণে ইসরায়েলের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।


পশ্চিম তীরে ২২টি নতুন বসতি স্থাপনে দেশটির নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদন দিয়েছে। অতি-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন, যিনি নিজেই একজন বসতি স্থাপনকারী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাৎজও এ ঘোষণা দিয়েছেন, যিনি বসতি স্থাপনকারী সম্প্রদায়গুলোর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন।


স্মোট্রিচ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেন, আমরা বসতি স্থাপনের জন্য একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জুডিয়া ও সামেরিয়ায় ২২টি নতুন সম্প্রদায়, সামেরিয়ার উত্তরে নতুন করে বসতি স্থাপন করা হবে এবং ইসরাইল রাষ্ট্রের পূর্ব অক্ষকে শক্তিশালী করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী পদক্ষেপ, সার্বভৌমত্ব!’ কাৎজ বলেন, এই উদ্যোগ এই অঞ্চলের চেহারা বদলে দেবে এবং আগামী বছরগুলোতে বসতির ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।


অপরদিকে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তকে খুবই উদ্বেগজনক ও বিপজ্জনক হিসেবে দেখছে। তারা মনে করে, এটা দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ আরও দূরে সরিয়ে দেয়। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর থেকে প্রায় ১৬০টি বসতি তৈরি করেছে ইসরাইল। যেখানে প্রায় সাত লাখ ইহুদির বসবাস। 


ফিলিস্তিনিরা এই জমিগুলোকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে দাবি করে। এক বিবৃতিতে হামাস ইসরাইলের বিরুদ্ধে সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ফিলিস্তিনি ভূমিকে ইহুদি করণের অভিযোগ করেছে। হামাস বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক ইচ্ছার স্পষ্ট অমান্য এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থি লিকুদ পার্টি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে একটি মানচিত্রও প্রকাশ করেছে, যেখানে ভূখণ্ডজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ২২টি স্থান দেখানো হয়েছে।


সূত্র: এএফপি


এসজেড