ঢাকা | বঙ্গাব্দ

রাইসির মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়বে?

কেউ কখনো কল্পনাই করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ ইসরায়েলের হামলার সাহস করতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন ইব্রাহিম রাইসি।
  • | ২০ মে, ২০২৪
রাইসির মৃত্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়বে? ইব্রাহিম রাইসি

সাম্প্রতিক সময়ে চলমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর ভেতরকার দ্বন্দ্ব সংঘাত বিশ্বের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যেই রহস্যজনকভাবে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন— ভূরাজনীতির প্রভাবশালী এই দুই ব্যক্তির মৃত্যুতে অনেকটাই পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চলমান সংঘাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে ইব্রাহিম রাইসি ও হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু। গেল কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে তেহরান। বিশেষ করে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, বাহরাইন ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অর্থ ও সমরাস্ত্রের অন্যতম যোগানদাতা ছিল ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী। নতুন প্রেসিডেন্ট এতটা আগ্রাসী হয়ে উঠবেন কিনা সেটা এখন বড় প্রশ্ন এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছে।

এসব গোষ্ঠী মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের স্বার্থের জন্য ক্রামাগত হুমকি তৈরি করে আসছে। এর মধ্যেই এপ্রিল মাসে ইব্রাহিম রাইসির সরকার সরাসরি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলও ইরানের ইস্ফাহান শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই ঘটনার আগে কেউ কখনো কল্পনাই করতে পারেনি মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ ইসরায়েলের হামলার সাহস করতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন ইব্রাহিম রাইসি।

শুধু এই হামলা নয়; কয়েক দশক ধরে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট ইসরায়েল ও পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি এই তালিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্টমিত্র সৌদি আরবও। আর পশ্চিমা এসব শক্তির কোনো তোয়াক্কা না করে পরমাণু কর্মসূচি আরও জোরদার করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন ইব্রাহিম রাইসি। এমনকি বেশ কয়েকবার ইসরায়েলকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার হুমকিও দেন সদ্য নিহত ইরানি প্রেসিডেন্ট। বলা হচ্ছে— রাইসির মৃত্যু প্রভাব ফেলতে পারে দেশটির পরমাণু কর্মসূচিতেও।

রাইসির মৃত্যু শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বরং প্রভাব ফেলবে মধ্য এশিয়া ও ইউরোপীয় ভূরাজনীতিতেও। বিশেষ করে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রুশ বাহিনীকে যে বিপুল পরিমাণ ড্রোন ও সমরাস্ত্র সরবরাহ করেছে তেহরান এখন সেই পদক্ষেপ কতটা ধারাবাহিক থাকবে সে প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে অনেক মহলে। এছাড়াও রাইসির নেতৃত্বে আর্মেনিয়া-আজারবাইজান সংঘাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেহরান।

ষড়যন্ত্র তত্ত্ব


এদিকে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসির নিহতের ঘটনায় ইরানে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা করছে কূটনৈতিক মহল। তারা বলছেন, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এসব কূটনীতিকের মধ্যে একজন মার্কিন সরকারের সাবেক স্টেট ফর হাউস বিভাগের অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জোয়েল রুবিন। ইরানের প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর তিনি বলেছেন, রাইসি এবং তার সহযোগীদের মৃত্যুর নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আগামী দিনে এই ঘটনা ইরানের রাজনীতি তো বটেই, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

রুবিন বলেছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি নিজেই প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেন রাইসিকে। শুধুমাত্র প্রসিডেন্ট হিসেবেই নন, আক্ষরিক অর্থেই খামেনি নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে বেছে নেন তাকে। যাতে তার অবর্তমানে ইরানের সবকিছু রাইসির ইশারায় পরিচালিত হয়। ফলে রাইসির মৃত্যুতে পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করবে।

পশ্চিম এশিয়া এবং মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে গবেষণা করে বই লিখেছেন ত্রিতা পার্সি। তার মতে— রাইসির মৃত্যুতে ভাইস প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপতির পদে উন্নীত হবেন। কিন্তু তার পরও ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করাতে হবে, যা মোটেই সহজ কাজ হবে না। কারণ সরকারবিরোধী অবস্থান চরম আকার ধারণ করেছে দেশটিতে। সম্প্রতি যে সংসদীয় নির্বাচন হয়, তাতে ভোটই দিতে যাননি মানুষজন। আর দুর্ঘটনার নেপথ্যে যদি সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়ে, তাতেও অশান্তি ছড়াতে পারে।

ইরানের জনগণ যা ভাবতে পারে?

এটি যদি নিছক দুর্ঘটনাও হয়, তবু ইরানিরা তা ভাববে না। কারণ, তারা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিশ্বাসে অভ্যস্ত। রাইসির ক্ষেত্রে তা ঘটতে পারে। কারণ, ইরানের সঙ্গে ইসরায়েল প্রথম প্রকাশ্য সামরিক সংঘর্ষের পরই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হলো। এমন প্রেক্ষাপটে অনেক ইরানি ও সম্ভবত সরকার নিজেও হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ইসরায়েলকে দোষারোপ করতে পারে।

আরও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আবির্ভাব হতে পারে বলে মনে করেন ইয়র্ক টাউন ইনস্টিটিউটের ফেলো শে খাতিরি। তিনি বলছেন, অনেক ইরানি রাইসির প্রেসিডেন্ট পদকে ক্যানসারে আক্রান্ত ৮৫ বছর বয়সী খামেনির সফল উত্তরসূরি হওয়ার ‘অডিশন’ হিসেবে দেখে আসছিলেন। কিন্তু খামেনির ছেলেও মোজতবাও বাবার মসনদে বসতে চান। তলে তলে ইরানে উপদলীয় কোন্দল ঘনীভূত হচ্ছিল।

রাইসি দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী রেভুলিউশনারি গার্ডের পছন্দের মানুষ। কিন্তু মোল্লাদের অনেকেই মোজতবার পক্ষে। যার কারণে পাণ্ডিত্য না থাকলেও ইরানের সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী বিদ্যাপীঠ কওম সেমিনারিতে প্রভাষক নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। খামেনির ছেলেকে গ্রহণ করে মোল্লারা রাইসির বিপক্ষে অবস্থানের ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন বলে মনে করেন খাতিরি।

গভীরভাবে ভাবলে, রাইসিকে হত্যার প্রেক্ষাপট আছে। কারণ, মোজতবা এখন তার বাবার আশ্রয় পান। কিন্তু খামেনি অসুস্থ হওয়ায় বেশি দিন তা অব্যাহত থাকবে না। অন্যদিকে, রাইসি প্রসিকিউটর-জেনারেল ছিলেন। সবার হাঁড়ির গোপন খবর তার জানা। নির্বাচনী বিতর্কের সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে ভয় দেখাতে দুর্নীতির একটি নথি ফাঁস করেছিলেন তিনি। মোদ্দাকথা, রাইসির পক্ষে রাজনৈতিক মাস্তানের মতো আচরণ ও সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান জে. এডগার হুভারের মতো জিম্মি করার সংস্কৃতির চর্চা সম্ভব। রাইসির মৃত্যুতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নিতে পারেন মোজতবা। কারণ, এর ফলে বাবার উত্তরসূরি হতে তার পথে আর দৃশ্যমান কোনো বাধা থাকল না।

পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার দৌড়ে রাইসির মৃত্যু প্রভাব ফেলবে?

এই মৃত্যুর ফলে অসুস্থ খামেনির বিকল্প খোঁজার জন্য উঠে পড়ে লাগবে রেভুলিউশনারি গার্ড। ১৯৮৯ সালে আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর পর সর্বোচ্চ নেতার আসনে বসেন খামেনি। তিনি ছিলেন দুর্বল প্রার্থী। অন্যান্য গোষ্ঠীগুলো তাকে স্বার্থের পথে বড় হুমকি মনে করেনি। কিন্তু পরে তাকে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়। এ জন্য যারা তাকে ক্ষমতার মসনদে বসিয়েছিলেন, সাবধানী কৌশলে তাদের একে একে নির্মূল করে তিনি নিজেকে দীর্ঘমেয়াদি শাসকে রূপান্তরিত করেন।

তবে রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর চেয়ে এখন রেভলিউশনারি গার্ড প্রভাবশালী। এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ও ব্যক্তিরা তেমন পাত্তা পাবে না। আর এই বাহিনীর প্রধান গালিবাফ প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। যদিও তিনি সর্বোচ্চ নেতা হতে পারবেন না। কারণ তিনি ধর্মগুরু নন।

সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে মোজতবার উত্থান হলেও বংশগত শাসন ইরানে রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি করবে। কার খোমেনি ও খামেনি-উভয়েই শাহের অধীনে বংশগত শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেন। মোজতবাকে সর্বোচ্চ নেতা বানাতে গেলে সেই ইরানি জনগণের কাছে বংশগত শাসনকে বৈধ করতে হবে। সেটা বেশ কঠিন কাজ।

১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর প্রথম বছরগুলোতে সর্বোচ্চ নেতার লাগামহীন প্রভাব নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়। ইসলামি প্রজাতন্ত্রে একক সর্বোচ্চ নেতার প্রয়োজন নেই বলে তখন আলোচনা উঠে। কারণ, তাত্ত্বিকভাবে সংবিধানে একদল নেতার সমন্বয়ে সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাউন্সিল অনুমোদিত। খামেনি মারা গেলে সেই বিতর্ক আবার নতুন করে জেগে উঠতে পারে। রাষ্ট্র যুক্তি দেখাতে পারে, খোমেনি ও খামেনি ঐশ্বরিক মানুষ ছিলেন, যারা জ্ঞান ও গুণের শিখরে পৌঁছেছিলেন। তাদের শূন্যস্থান এখন কেবল একদল পুরুষের সম্মিলিত প্রতিভাই পূরণ করতে পারে।

তবে এরপরে যাই ঘটুক না কেন, ইরানের রাজনীতিতে ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’ খেলার প্রথম ধাপ হবে রাইসির এই ‘হার্ড ল্যান্ডিং’। কয়েক মাস ধরে এই খেলায় ডুবে থাকবে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র। এই ঘটনাপ্রবাহ শুধু রাইসি-পরবর্তী যুগ নয়, খামেনি-পরবর্তী যুগও নির্ধারণ করে দিতে পারে।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া

ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। ফলে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় প্রশ্ন উঠছে, এর পেছনে ইসরায়েলের হাত আছে কিনা? ওয়াইনেট নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিসহ অন্য কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে হেলিকপ্টার ‘বিধ্বস্ত’ হওয়ার বিষয়ে ইরানের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে ইসরায়েল।
 
যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াইনেট নিউজ বলছে, ইরানে রোববার (১৯ মে) হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক নেই। সিনিয়র ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, রাইসি এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যু’ইরানের প্রতি ইসরায়েলের নীতিকে প্রভাবিত করবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

অবশ্য ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে কয়েকজন ইহুদি ধর্মীয় নেতা। এটা ঈশ্বরের পক্ষ থেকে শাস্তি বলেও বিশ্বাস তাদের। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রাইসির মৃত্যুর পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করেছে ইহুদি ধর্মীয় নেতারা। ইসরায়েল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও ইহুদি ধর্মীয় নেতারা রাইসির মৃত্যুর পর তার প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন।

ঘন কুয়াশার কারণে রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়। সফরসঙ্গীসহ রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর বিশ্বের বিভিন্ন নেতারা শোক প্রকাশ করছেন। তার বিপরীতের ইহুদি ধর্মীয় নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি ইহুদি ধর্মীয় নেতা দাবি করেছেন, এটা ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ ছিল।

রাইসিকে ‘তেহরানের জল্লাদ’ উল্লেখ করেছেন রাবি মেইর আবুতবুল। ফেসবুকে এক পোস্ট করে তিনি রীতিমতো রাইসির সমালোচনা করেছেন। ইসরায়েল ও ইহুদিদের প্রতি রাইসির মনোভাবের কঠোর নিন্দা জানান আবুতবুল। তার ভাষায়, এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা ঐশ্বরিক শাস্তি। খুব নোংরা ভাষায় আবুতবুল লেখেন, সে ইহুদিদের ঝুলাতে চেয়েছিল, তাই ঈশ্বর তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা ইসরায়েলবিরোধী ক্রুকে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করে বাতাসে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছেন।

এছাড়া এসব ইহুদি নেতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন মার্কিন দুই কংগ্রেসম্যানও। তাদের একজন রিক স্কট। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিক স্কট সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে রাইসি সম্পর্কে লিখেছেন, ‘তাকে ভালোবাসা বা সম্মান করা হয়নি এবং কেউ তাকে মিস করবে না। যদি তিনি চলে যান, সত্যিই আশা করি ইরানি জনগণ তাদের দেশকে খুনি স্বৈরশাসকদের হাত থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে।’

অপরজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান মাইক ওয়াল্টজ। আল-জাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়, মাইক ওয়াল্টজ সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে রাইসি সম্পর্কে লিখেছেন, ‘দারুণ পরিত্রাণ। রাইসি তার প্রেসিডেন্সির আগে এবং সময়কালে একজন খুনি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ছিলেন। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করার আরেকটি অজুহাত হিসেবে ইরান এখন হত্যার জন্য (রাইসিকে) ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর দোষ চাপাবে।’

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, এপি