২০১৯ সালের ইস্টার সানডে বোমা হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থতার জন্য এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে শ্রীলঙ্কার স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ওই হামলায় ৪৫ জন বিদেশীসহ ২৭৯ জনের প্রাণহানি ঘটে। কলম্বো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
জাতীয় পুলিশ কমিশন ইসলামী চরমপন্থীদের আসন্ন হামলার পূর্ব সতর্কতা উপেক্ষা করার জন্য রাজ্য গোয়েন্দা পরিষেবা (এসআইএস) এর তৎকালীন প্রধান নিলান্ত জয়াবর্ধনেকে বরখাস্ত করে। আদালতের রেকর্ড থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১শে এপ্রিল তিনটি হোটেল ও তিনটি গির্জায় সমন্বিত আত্মঘাতী হামলার ১৭ দিন আগে জয়াবর্ধনেকে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সতর্ক করা হয়। ওই হামলায় ৫শ’ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়।
শনিবার রাতে পুলিশ কমিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি শৃঙ্খলা তদন্তে জয়াবর্ধনেকে অবহেলা এবং কর্তব্যে অবহেলার সাতটি অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে, কমিশন তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইস্টার বোমা হামলার পর, জয়াবর্ধনেকে এসআইএস প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পুলিশ বাহিনীর উপ-প্রধানের ভূমিকায় উন্নীত করা হয়। তবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বারবার বিচারিক আদেশের পর, এক বছর আগে শৃঙ্খলা শুনানি মুলতুবি রেখে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়।
এটি ছিল শ্রীলঙ্কার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। হামলার পরপরই শুরু হওয়া একটি শীর্ষ পর্যায়ের তদন্তে দেখা গেছে, দায়িত্ব পালনে গাফলতি ও ব্যর্থতার জন্য তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা ও জয়াবর্ধনেসহ তার চার জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা উচিত। একটি দেওয়ানি মামলার পর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে জারি করা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুসারে, তারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দশ লক্ষ ডলারেরও বেশি অর্থ প্রদান করেছে।
২০১৯ সালের বোমা হামলার জন্য স্থানীয় একটি জিহাদি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হয়, যারা ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। রাষ্ট্রপতি অনুরা কুমার দিসানায়েকের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার নতুন সরকার ইস্টার হামলার তদন্ত জোরদার করার এবং বোমা হামলার জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সূত্র: এএফপি
এসজেড