ব্রিটিশ-সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক কম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা আদালতে দেওয়া নথিতে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে, তাদের কভিড টিকা ‘বিরল কিছু ক্ষেত্রে’ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এই স্বীকারোক্তির ফলে বৃহৎ ওষুধ কম্পানিটি বেশ বড় অঙ্কের জরিমানার সম্মুখীন হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রস্তুত করা করোনার টিকাকে কয়েকটি মৃত্যু ও গুরুতর অসুস্থতার জন্য দায়ী দাবি করে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হচ্ছে। আইনজীবীদের দাবি, ওই টিকা এমন একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, যা কয়েকটি পরিবারের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে গত বছর প্রথম মামলাটি করেন জেমি স্কট নামের এক ব্যক্তি। ২০২১ সালে টিকা নেওয়ার পর তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং রক্তপাত হয়। ফলে তাঁর মস্তিষ্কে স্থায়ী ক্ষতি হয়। হাসপাতাল থেকে অন্তত তিনবার স্কটের স্ত্রীকে ডেকে বলা হয়, তাঁর স্বামী মারা যাচ্ছেন।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা কম্পানি এসব দাবিকে চ্যালেঞ্জ করলেও ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টে জমা দেওয়া একটি আইনি নথিতে স্বীকার করেছে, তাদের কভিড টিকা ‘খুব বিরল ক্ষেত্রে টিটিএস ঘটাতে পারে’।
টিটিএস হলো থ্রম্বোসিস উইথ থ্রাম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমের সংক্ষেপ। এই সিনড্রোমে শরীরের রক্ত জমাট বেঁধে যায় এবং রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায়। ব্রিটিশ হাইকোর্টে এ পর্যন্ত ৫১টি মামলা করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এবং শোকার্ত স্বজনরা ১০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন।
হাইকোর্টে দায়ের করা জেমি স্কটের দাবির প্রেক্ষাপটে আত্মপক্ষ সমর্থনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই স্বীকারোক্তি একটি আইনি বিরোধের দিকে যেতে পারে। ওষুধ কম্পানিটি যদি নির্দিষ্ট মামলার ক্ষেত্রে এই টিকা মৃত্যু কিংবা গুরুতর অসুস্থতার কারণ ছিল বলে স্বীকার করে নেয়, তাহলে তাদের জরিমানা দিতে হতে পারে।
সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ