রাশিয়ার উত্তর ককেশাসের দাগেস্তানে উপাসনালয়ে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আটজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন। এই ঘটনায় ১২ জন পুলিশ আহতও হয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। রোববারের (২৩ জুন) এই হামলায় আরও আরও বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তারা। এছাড়া আহতও হয়েছেন অনেকে।
দারবেন্ত ও মাখাচকালা শহরে একটি সিনাগগ, দুটি গির্জা এবং একটি পুলিশ চেকপয়েন্টে এই হামলা চালানো হয়। এই দুই শহরেই বড় সংখ্যক খ্রিস্টান ও ইহুদিদের বাস। সেখানেই একটি গির্জা ও সিনাগগে হামলা চালানো হয়। বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীর সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন ডেরবেন্টের অর্থোডক্স চার্চের যাজক নিকোলাই কোতেলনিকোভ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
রুশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, দুই হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে ভবনগুলোতে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। হামলাকারীদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে দাগেস্তান অতীতে জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়েছে।
রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, হামলাকারীরা ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের’ সদস্য ছিল বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মনে করছে। অবশ্য দারবেন্তে এর আগে গাড়িতে করে হামলাকারীদের পালিয়ে যেতে দেখা গেছে। মস্কো থেকে আল জাজিরার ড্যানিয়েল হকিন্স বলেছেন, দাগেস্তান এর আগে ১৯৯০ এবং ২০০০ এর দশকের শুরুতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা দেখেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় একটি তদন্ত শুরু করেছে রাশিয়া তদন্তকারী কমিটি। তবে এখনও কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হামলাকারীরা গির্জা এবং সিনাগগে হামলা চালালে পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। গুলিবর্ষণে মাখাচকালায় চার এবং দারবেন্তে দু’জন হামলাকারী মারা গেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই হামলার নেপথ্যে কে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে ঘটনার প্রভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয় পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা।
দাগেস্তানের প্রশাসক সের্গেই মেলিকোভ জানিয়েছেন, নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় সোমবার থেকে তিনদিনের জাতীয় শোক পালন করা হবে। জল্পনা উসকে হামলার নেপথ্যে ‘বিদেশি শক্তির’ হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। অর্থাৎ ঘুরিয়ে ইউক্রেনের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। তবে এনিয়ে রাশিয়ার অন্দরের দ্বন্দ্ব রয়েছে। অধিকৃত ইউক্রেনের রুশ জাতীয়তাবাদী নেতা দিমিত্রি রগোঝিনের কথায়, “সবকিছুর দায় ইউক্রেন ও ন্যাটো জোটের উপর চাপালে হিতে বিপরীত হবে। এটা আমাদের বুঝতে হবে।”