ভারতের ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেস ট্রেন। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ট্রেনটির
১৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত এবং ২০ জন আহত
হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটার দিকে ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হাওড়া থেকে মুম্বাইগামী ট্রেনটি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ যাত্রী। হতাহতের
সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রেলের তরফ থেকে ইতোমধ্যে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে।
লাইনচ্যুত হওয়া ১৮টি বগির মধ্যে ১৬টিই যাত্রীবাহী। বাকি দু’টির মধ্যে
একটি ট্রেনের বিদ্যুৎ সংযোগের এবং অন্যটি প্যান্ট্রি কার। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে চক্রধরপুরে পাঠানো হয়েছে।
কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট
নয়। তবে রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন,
যে জায়গায় মুম্বাইগামী ট্রেনটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে, তার কাছেই একটি মালগাড়িও লাইনচ্যুত অবস্থায় আছে। তবে এই দুটি দুর্ঘটনার
সঙ্গে কোনো যোগসূত্র আছে কি না, তা
এখনও জানা যায়নি। কেন দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে
অনুসন্ধান শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।ঝাড়খণ্ডে রেল দুর্ঘটনার পর ইতোমধ্যেই দক্ষিণ
পূর্ব রেলের একাধিক স্টেশনে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।
ঘন ঘন ট্রেন দুর্ঘটনায়
যাত্রী সুরক্ষায় রেলের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি। দুর্ঘটনায় যারা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘আর কত দিন
আমাদের এ সব সহ্য
করতে হবে? কেন্দ্রীয় সরকারের এই অকর্মণ্যতার কি
কোনও শেষ নেই?’
প্রসঙ্গত, গত বছর ওড়িশার
বাহানগায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ছবি এখনও আবছা হয়নি। সেখানেও একটি মালগাড়ির উপর উঠে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরা। চলতি বছরে নিউ জলপাইগুড়ির কাছে কাঞ্চনডঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এরপর অতি সম্প্রতি ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস উত্তরপ্রদেশে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ বার ফের
রেল দুর্ঘটনা ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরের কাছে।
দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ-পূর্ব
রেলের মুখ্য জনসংযোগ কর্মকর্তা ওমপ্রকাশ চরণ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর ৩টা ৪৩মিনিটে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেনটি। উদ্ধারকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর
তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। এ ছাড়া আরও
পাঁচ জন যাত্রী আহত
হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাদের চক্রধরপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৮০ শতাংশ যাত্রীকে
বাসে চক্রধরপুর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ যাত্রীকে
একটি বিশেষ ট্রেনে চক্রধরপুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ চক্রধরপুর থেকে একটি বিশেষ ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেবে।