রাশিয়ার পশ্চিমের কুরস্ক হামলা চালিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে বিস্ময়কর আক্রমণ শুরু করার পর সেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনী লড়াই করছে বলে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
শনিবার নিজের রাত্রিকালীয় ভিডিও বক্তৃতায় জেলেনস্কি বলেন, আমাদের পদক্ষেপের উদ্দেশ্য যুদ্ধকে আগ্রাসীর ভূখণ্ডে ঠেলে দেওয়া। ইউক্রেন প্রমাণ করেছে যে প্রকৃতপক্ষে তারা ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং হামলাকারীর ওপর প্রয়োজনীয় চাপ নিশ্চিত করতে পারে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ভূখণ্ডে এটাই কিয়েভের সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনীয় বাহিনী রাশিয়ার ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে। শনিবার ওই হামলা পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। ইতিমধ্যে ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার ভেতর ২০ কিলোমিটার অগ্রসর হয়ে গেছে বলেও জানা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার নিজেদের তিনটি সীমান্ত অঞ্চলে জরুরি নিরাপত্তা অবস্থা জারি করে রাশিয়া। একই সময় রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ কিয়েভের বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ইউক্রেন সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইউক্রেনের এই আক্রমণে ক্রেমলিন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই আক্রমণকে বড় ধরনের উস্কানি বলে অভিহিত করেছেন। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করার পর রাশিয়ার এতটা ভেতরে আর কখনো যেতে পারেনি ইউক্রেনীয় বাহিনী।
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে রোববার প্রথম প্রহরের দিকে ইউক্রেনের হামলায় অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহত দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভ। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাসের খবর অনুযায়ী, রাশিয়া এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৬ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।
রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা জানিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত বাহিনী আসার পর পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়। তবে ইউক্রেন দ্রুততার সঙ্গে বাহিনী গড়ে তুলতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে ইউক্রেন কিভাবে এত সহজে কুরস্ক অঞ্চলের ভেতরে ঢুকে পড়ল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ব্লগারদের কেউ কেউ।