ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৯৯ বছর বয়সে দোষী সাব্যস্ত নাৎসি ক্যাম্পের সাবেক সচিব

বিচার শুরু হওয়ার পর এক পর্যায়ে ফুরচনার বলেন, ‘যা ঘটেছে তার জন্য দুঃখিত। সেই সময়ে স্টুথফে থাকার জন্য দুঃখিত।’
  • | ২১ আগস্ট, ২০২৪
৯৯ বছর বয়সে দোষী সাব্যস্ত নাৎসি ক্যাম্পের সাবেক সচিব আদলতে ইরমগার্ড ফুরচনার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১০ হাজারের বেশি (১০,৫০৫টি) হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইরমগার্ড ফুরচনারকে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত জার্মানির একটি আদালত। আদালত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) নির্দোষ হিসেবে ৯৯ বছর বয়সী ওই নারীর একটি আপিল প্রত্যাখ্যান করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি নাৎসি বাহিনীর স্টুথফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের এসএস কমান্ডারের সেক্রেটারি হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির লাইপজিগে অবস্থিত ফেডারেল আদালতের রায়ই চূড়ান্ত। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে উত্তর জার্মানির ইটজেহোতে একটি রাজ্য আদালত বিচারে তাকে দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ডাদেশ দেন।

ইরমগার্ড ফুরচনার কিশোরী অবস্থায় টাইপিস্ট হিসেবে স্টুথফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে যান। সেখানে তিনি ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত কাজ করেন। নাৎসি বাহিনীর সঙ্গী হিসেবে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচার হওয়া কয়েকজন নারীর মধ্যে তিনি অন্যতম। স্টুথফ ক্যাম্পে ফুরচনার একজন বেসামরিক কর্মী হিসেবে থাকলেও বিচারক বলেন, তিনি বন্দী শিবিরে কী ঘটছে সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন।

স্টুথফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে প্রায় ৬৫ হাজার বন্দীকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ইহুদি, পোল্যান্ডের অ-ইহুদি বাসিন্দা এবং বন্দী সোভিয়েত সেনারা। যেহেতু ফুরচনার তখন ১৮ বা ১৯ বছর বয়সী ছিলেন, তাই তাকে কিশোর আদালতে বিচার করা হয়।

ভয়ঙ্কর স্টুথফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পটি ছিল বর্তমান পোল্যান্ডের গডানস্কে। এই ক্যাম্পে বন্দীদের বিভিন্ন  নির্মম পদ্ধতিতে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে ১৯৪৪ সালের জুন মাসে কয়েক হাজার বন্দীকে গ্যাস চেম্বারে হত্যা করা হয়।

২০২২ সালে জার্মানির উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য শ্লেসউইগ-হলস্টেইনের ইটজেহো জেলা আদালতে ফুরচনারের বিচার হয়। সেই সময়ে বন্দী শিবিরে বেঁচে থাকা কয়েকজন ফুরচনারের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিচার চলাকালীন মারা গেছেন। বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ফুরচনার শ্লেসউইগ-হলস্টেইন প্রদেশে চলে যান এবং একজন টাইপিস্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ফুরচনারের বিচার শুরু হলে তিনি জার্মানিতে তার নার্সিংহোম থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তাকে হামবুর্গের একটি রাস্তা থেকে আটক করে।

বিচার শুরু হওয়ার পর এক পর্যায়ে ফুরচনার বলেন, ‘যা ঘটেছে তার জন্য দুঃখিত। সেই সময়ে স্টুথফে থাকার জন্য দুঃখিত।’

উল্লেখ্য, স্টুথফ কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কমান্ডার পল ওয়ার্নার হোপকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৯৫৫ সালেই কারাগারে পাঠানো হয়। পাঁচ বছর কারাভোগের পর তিনি মুক্তি পান।