ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণ মামলার আসামির মৃত্যু

পুলিশের দাবি, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে অভিযুক্ত তাফুজাল ইসলামকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয় বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
  • | ২৫ আগস্ট, ২০২৪
পুলিশ হেফাজতে ধর্ষণ মামলার আসামির মৃত্যু ঘটনা আসামের নগাঁও জেলার।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার এক ব্যক্তি পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। পুলিশের দাবি, শনিবার সকালে আসামি তাফুজাল ইসলাম পুলিশ হেফাজত থেকে পালাতে গিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আসাম। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী আসামের নগাঁও জেলার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনার সময় সে কোচিং থেকে ফিরছিল। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টার দিকে অভিযুক্ত তাফুজাল ইসলামকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয় বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। কিন্তু তাফুজাল ইসলাম সেখান থেকে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয়। পরে দুই ঘণ্টা ধরে অভিযান চালিয়ে তাফুজালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জেলার এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, থানায় জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হয় মূলত সেখানে ঠিক কী কী ঘটেছে, সে ব্যাপারে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার জন্য। সেখানে নেওয়ার পর সে একজন কনস্টেবলের হাতে থাকা তার হাতকড়া কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায় এবং পুকুরে ঝাঁপ দেয়। তিনি আরও বলেন, একজন কনস্টেবল এ ঘটনায় আহত হয়েছেন। আমরা তদন্ত করে দেখছি আসামি কীভাবে পালিয়ে গেল। যদিও পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের দলটি তাফুজাল ইসলামকে মামলার অন্য এক অভিযুক্তের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। একদিন আগে শুক্রবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগাঁও জেলার একটি এলাকায় কে বা কারা রাস্তার পাশে ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে এবং পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্থানীয় এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিশোরীটি রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। আমরা তার কাছে জানতে চাই কী ঘটেছে। কিন্তু সে ঠিকমতো কথা বলতে পারছিল না। সে কেবল এটুকু জানিয়েছে, তিন কিশোর তাকে ধর্ষণ করেছে। স্থানীয়রা উদ্ধার করার আগে কিশোরীটি ঘটনাস্থলে প্রায় এক ঘণ্টা পড়ে ছিল বলে জানা গেছে।

এদিকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর শুক্রবার নগাঁওসহ আসামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ। নগাঁওয়ে দোকান, বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার। এই ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে চিহ্নিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি সামগ্রিকভাবে আমাদের সবার বিবেকে আঘাত করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘কাউকে রেহাই দেব না এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’ তবে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত কীভাবে হঠাৎ মারা গেলেন, সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।