রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মানিকগঞ্জের শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে আহত ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিমিয়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার হচ্ছে ও এর কাঠামো গঠন করতে হবে। প্রতিটি সেক্টরে মেধাবীর প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের দেশে বাইরের মেধাবী লোকজন এসে চাকরি করে ডলারে বেতন নিচ্ছেন, এতে আমাদের রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। এখন আমাদের কাজ হবে যে যেখানে আছেন সেখানেই তার যোগ্যতা দিয়ে দেশের জন্য কাজ করা। একটা সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছি। আমরা যখন রাষ্ট্রকে গঠন করতে যাব তখন আমাদের মানসম্মত মেধা দরকার। আর সে মেধার জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। দেশ গঠন করতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধাসম্পন্ন মানুষ লাগবে।
সারজিস আলম আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ হতে হবে। বয়স্কদের সঙ্গে আমাদের মতের মিল না থাকতে পারে কিন্তু তাদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। পুলিশের যদি বিচার না হয়, তাহলে রাষ্ট্রের অন্য এক নাগরিকের বিচার করার বিষয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তারা বিচারের বাইরের কেউ না। পুলিশ বা অন্য যে কেউ হোক, যে দোষী তার বিচার হতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলায় অনেক সময় নির্দোষ মানুষের নাম উঠে আসার কথা শোনা যাচ্ছে, তারা হয়রানি হচ্ছে। কেউ কেউ এ মামলায় নাম দেওয়া, কাটা ও নতুন অন্তর্ভুক্তি নিয়ে টাকার লেনদেন করছেন। আপনারা শুধু এটুকু খেয়াল রাখবেন, আমাদের যে ভাইয়েরা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের নামটি যেন এভাবে অপব্যবহার না করা হয়। এ ধরনের ঘটনা যদি আপনার এলাকায় হয় তবে এর প্রতিবাদ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলনে নিহত-আহতদের এই যে এত বড় ত্যাগ ও দেশের জন্য যে প্রতিদান দিয়েছেন তার বিপরীতে আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব পালন করতে না পারি, দিনশেষে সবচেয়ে দায়ী হবো। এত প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা আমরা যদি রক্ষ করতে না পারি তবে ইতিহাস আমাদের কোনো দিন ক্ষমা করবে না।
এর আগে দুপুর একটায় আন্দোলনে জড়িত আহত শিক্ষার্থী ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়ক সারজিস আলম মতবিনিময় করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আবদুল্লা সালেহিন নয়ন, সামিয়া মাসুদ মুমু, মবাশ্বিরু জামান হাসান মৃধা, মেহেরাব হোসেন সিফাত, মহমম্দ হৃদয় হোসেন, আদিনা খান, খোন্দকার রায়হান, কাজী ইসমাইল হোসেন রুদ্র ও কাজী জুবায়ের প্রমুখ।