সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জেতাতে গোপন বৈঠক করার সময় ৫ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিয়ালকোল সহকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, গত রবিবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাদাই এলাকার গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে এ গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এস. বি রেলওয়ে কলোনী হাই স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আবু সামা, বাহুকা কলেজের প্রভাষক বাচ্চু কুমার ঘোষ, জনতা ব্যাংক সিরাজগঞ্জ জোনাল অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ইয়াসিন আরাফাত ও এদের সমন্বয়ক সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিয়ালকোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর ইসলাম। এ ঘটনার পর উপজেলার ১০ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে তাদের স্থলে নতুন করে নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি রবিবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাদাই এলাকার গার্ডেন প্যালেস রিসোর্টে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার তালিকাভুক্ত কয়েকজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা এক চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অবৈধ উপায়ে ভোটে জেতাতে গোপন বৈঠক করছেন। এরপর পুলিশ, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন অফিসের সমন্বয়ে গঠিত এক আভিযানিক দল ওই রিসোর্টে অভিযান চালায়। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। ফলে ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজ ও ওই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
এ বিষয়ে সংবাদ সন্মেলনে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, এ সংক্রান্ত বিষয়ে সোমবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এদের মূল হোতা শিয়ালকোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আমিনুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে কোন প্রার্থীর পক্ষে এ গোপন বৈঠক হয়েছে সে বিষয়ে চূড়ান্ত তদন্তের পর জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এ সংবাদ সন্মেলনে রিটারিং কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনার পর ইতোমধ্যে ১০ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে বদল করে নতুন ১০ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
