ইসলামে সততাকে একটি মহৎ গুণ ও নৈতিকতার মূল ভিত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এটি কেবল মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে নয়, সামাজিক, পারিবারিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোরআন ও হাদিসে সততার গুরুত্ব, এর পুরস্কার, এবং অসততার পরিণতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কোরআনে সততার গুরুত্ব ও পুরস্কার
কোরআনে বিভিন্ন আয়াতে সততা রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং এর জন্য পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সততা আল্লাহর আনুগত্যের প্রতীক। আল্লাহ তাআলা সততাকে মানুষের ঈমানের অংশ বলে উল্লেখ করেছেন। কোরআনে এসেছে, হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। — (সুরা আত-তাওবা: ১১৯)
সততা জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম
যারা সততার পথে থাকে, তাদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, এই দিন সত্যবাদীদের তাদের সত্য কথা উপকার করবে। তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে নির্ঝরিণী প্রবাহিত। — (সুরা আল-মায়িদা: ১১৯)
সততার মাধ্যমে বরকত প্রাপ্তি: ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা রক্ষা করলে আল্লাহ বরকত দান করেন। কোরআনে বলা হয়েছে, মানুষের ওজন ও পরিমাপে খুঁত দিয়ো না এবং পৃথিবীতে দুর্নীতি ছড়িও না। — (সুরা আশ-শুআরা: ১৮১-১৮৩)
হাদিসে সততার গুরুত্ব ও পুরস্কার: রাসুলুল্লাহ (সা.) সততাকে ঈমানের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বিভিন্ন হাদিসে সততার গুরুত্ব ও পুরস্কার সম্পর্কে বলেছেন।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা সত্য কথা বল, কারণ সত্য কথা মানুষকে নেকি ও সৎকর্মের দিকে নিয়ে যায় এবং সৎকর্ম মানুষকে জান্নাতে পৌঁছে দেয়। — (সহিহ মুসলিম: ২৬০৭)
সত্যবাদীদের সাথে হাশরের দিন অবস্থান
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সত্যবাদীরা কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক এবং শহীদদের সাথে অবস্থান করবে। — (সহিহ বুখারি: ৬০৯০)
ইসলামে সততা একজন মুমিনের সবচেয়ে মূল্যবান গুণ। এটি শুধু আধ্যাত্মিক সফলতার চাবিকাঠি নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমও। কোরআন ও হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী, যারা জীবনে সততা বজায় রাখে, তারা পৃথিবীতে সম্মানিত হয় এবং পরকালে জান্নাতের পুরস্কার লাভ করে।
thebgbd.com/NIT