ঢাকা | বঙ্গাব্দ

৩ মাসের মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন!

প্রসিকিউশন দল দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
৩ মাসের মধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন! সংগৃহীত

ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গণহত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বহু মামলা দায়ের করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) ইতিমধ্যেই একটি মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পূর্ণোদ্যমে। মামলার একমাত্র অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।ধারণা করা হচ্ছে, তিন মাসের মধ্যেই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে।


এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তদন্ত কার্যক্রমে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাকে, যিনি অপরাধের 'মধ্যবিন্দু' হিসেবে চিহ্নিত। তিনি আশাবাদী, তিন মাসের মধ্যেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে। পরবর্তী পর্যায়ে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।


আইন অনুযায়ী, আইসিটি ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আজীবন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না এবং ভোটার তালিকা থেকেও বাদ পড়বেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) এই বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।


৫ আগস্ট ছাত্র ও সাধারণ মানুষের অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। দেশব্যাপী তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়লেও আইসিটি একটি মামলায় তাকে অভিযুক্ত করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। অন্য একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।


প্রসঙ্গত, গত ১৭ ডিসেম্বর তদন্ত সংস্থার আবেদনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে।


ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের পর গত সাড়ে তিন মাসে ৩০০টিরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে হত্যা, গণহত্যা, গুম, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের নানা অভিযোগ রয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ১৬৮টি অভিযোগ তদন্ত সংস্থায় পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ ৪৪টি।


একাধিক গণমাধ্যমে খবর আসে, ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন দল ১০ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইন্টারপোলের রেড নোটিশ চেয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি এনামুল হক সাগর সাংবাদিকদের জানান, ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে এমন কোনো নোটিশ পাওয়া যায়নি। যদিও এই সংক্রান্ত চিঠি আগেই পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি।


ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ছবি এবং তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। তবে গতকাল পর্যন্ত সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এ ধরনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।


thebgbd.com/AR