ভারতে পাচারকালে আবারও বেনাপোল ইমিগ্রেশন সীমান্তের ওপারে ৫০টি স্বর্ণবারসহ ৪ পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
জব্দ করা স্বর্ণের বারগুলোর ওজন ৫ কেজি ৮৪০ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৬ হাজার ১৬৫ টাকা।
বুধবার (০৮ মে) সন্ধ্যায় ভারতের ১৪৫ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ এক বার্তায় আটকের এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী শরীয়তপুরের মাতবরকান্দি উপজেলার আব্দুল হোসেন মোল্লার স্ত্রী দিলরুবা আক্তার। বেনাপোল কাস্টমস পার হয়ে ভারতে ঢোকার পর তার গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় ইমিগ্রেশনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিএসএফের। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পায়ুপথ থেকে দুটি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
একই দিন পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে বাস থেকে দুই ভারতীয় নাগরিককে ১৮টি স্বর্ণের বারসহ আটক করে বিএসএফ।
এরা হলেন, উত্তর ২৪ পরগণার পশ্চিমবঙ্গের আকারে অবস্থিত ধাকপাদা গ্রামের হরিপদ রায়ের ছেলে তাপস রায় ও কোরবাগার জেলার নামনগর গ্রামের অনুপ লুমার ছেলে অভিজিৎ।
অন্যদিকে একই সময় পেট্রাপোল বন্দর থেকে ভারতীয় ট্রাক চালক পোলতা গ্রামের দিলিপ মণ্ডলের ছেলে উজ্জ্বল মণ্ডলকে ৩০ টি স্বর্ণের বারসহ আটক করে বিএসএফ। তিনি বেনাপোল বন্দর থেকে মনসুর শেখ নামে এক ব্যক্তির দেওয়া ৩০টি স্বর্ণের বার নিয়ে ট্রাকে লুকিয়ে ভারত যাচ্ছিল।
ভারতের ২৪ পরগনা সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের পাবলিক রিলেশন অফিসার ডিআইজি শ্রী এ কে আর্য স্বর্ণের বার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, বেনাপোল কাস্টমসের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে স্বর্ণ পাচারের ‘গোল্ডেন রুট’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দর। তবে, স্বর্ণ নিয়ে নির্বিঘ্নে বেনাপোল পার হয়ে গেলেও, পেট্রাপোলে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন ধরা পড়ছে চোরাকারবারিরা।
এদিকে পাচার রোধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আরও জোরালো পদক্ষেপ নিলেও বাংলাদেশ কাস্টমসে এনিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই। অভিযোগ উঠেছে, এসব পাচারে কার্যক্রমে কাস্টমসের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে চোরাকারবারীদের সখ্যতা থাকতে পারে। যার কারণে স্ক্যানিং মেশিন মেরামত বা যাত্রীর ব্যাগেজ তল্লাশিতে অনিহা রয়েছে।
সূত্র জানায়, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ৪ টি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন করে। এর একটি মোবাইল স্ক্যানার স্থাপন হয় বন্দরের বাইপাস সড়কে পণ্য প্রবেশ দ্বারে। অত্যাধুনিক মেশিনটি পণ্যবাহী ট্রাকে আসা রাসায়নিক, মাদক, অস্ত্র ও মিথ্যা ঘোষণার পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম।
এছাড়া বেনাপোল চেকপোস্ট ও রেল স্টেশন আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন- কাস্টমস রুটে চোরাচালান রোধে আরও ৩টি স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়। স্ক্যানিং মেশিনটি কাস্টমসের পক্ষে পরিচালনা করে আসছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটস। তবে স্ক্যানিং মেশিনগুলোর মধ্যে ৩ টি যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ায় গেল ৬ মাস ধরে স্ক্যানিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে এপথে।
বেনাপোল কাস্টমসের পক্ষে স্ক্যানিং মেশিন তদারকিতে নিযুক্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাসোসিয়েটসের বেনাপোল অফিস ব্যবস্থাপক বনি আমিন জানান, স্ক্যানিং মেরামত করতে বড় অংকের অর্থের প্রয়োজন।
সেটি চুক্তি অনুযায়ী কাস্টমস ব্যয় বহন করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্ক্যানিং ৩টির কার্যক্রম বন্ধ আছে।