ঢাকা | বঙ্গাব্দ

নবজাতকের কানে আজান-ইকামত দেবেন যেভাবে

কেউ কেউ মনে করে থাকেন, সন্তান জন্মের পরপর মসজিদে আজান দিলে এবং তা শোনা গেলে নবজাতকের কানে আজান দিতে হয় না।
  • নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
নবজাতকের কানে আজান-ইকামত দেবেন যেভাবে সংগৃহীত

নবজাতকের কানে আজান ও ইকামত দেওয়া সুন্নত। উবাইদুল্লাহ ইবনে আবু রাফি (রা.) বলেন, ফাতিমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (স.) তার কানে নামাজের আজানের ন্যায় আজান দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ: ৫১০৫)


নবজাতকের কানে আজান-ইকামত দেওয়ার পদ্ধতি

এই আজানও নামাজের আজানের মতোই হবে। অর্থাৎ আজানের সব বাক্য থাকবে। যারা মনে করে হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ থাকবে না, তাদের ধারণা ভুল। বরং হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহও থাকবে। এমনকি এই দুই বাক্য বলার সময় চেহারা ডানে-বামে ঘোরানোও উত্তম।


তবে, এই আজান নামাজের আজানের মতো উচ্চস্বরে দিবে না; বরং স্বাভাবিক আওয়াজে দিবে। আর ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দিবে। 


ফাতেমা (রা.) যখন আলী (রা.)-এর ছেলে হাসান (রা.)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (স.) তার ডান কানে নামাজের আজানের ন্যায় আজান দিয়েছিলেন এবং বাম কানে ইকামত দিয়েছিলেন। (শুআবুল ইমান: ৮৬২০) হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন যার সন্তান হয়, সে যেন তার ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামত দেয়। (শুআবুল ঈমান: ৮৬১৯)


কেউ কেউ মনে করে থাকেন, সন্তান জন্মের পরপর মসজিদে আজান দিলে এবং তা শোনা গেলে নবজাতকের কানে আজান দিতে হয় না। এটি ভুল ধারণা। বরং মসজিদে আজান হলেও নবজাতকের কানে পৃথকভাবে আজান দিতে হবে। কারণ হাদিসে প্রমাণিত, নবীজি নবজাতকের কানে আজান দিয়েছেন। 


এছাড়াও ছেলে সন্তান ও মেয়ে সন্তান পার্থক্য করা যাবে না। বরং প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই ডান কানে আজান ও বাম কানে ইকামত দেয়া সুন্নত।


(জামে তিরমিজি: ১/২৭৮; তুহফাতুল আহওয়াযি: ৫/৮৯; তাকরিরাতে রাফেয়ি: ১/৪৫; ইলাউস সুনান: ১৭/১২৩; রদ্দুল মুহতার: ১/৩৮৫, ১/৩৮৭; আলমুহিতুল বুরহানি: ২/৮৯; ইমদাদুল ফতোয়া: ১/১০৮)


নবজাতকের কানে আজান-ইকামত দেওয়ার কারণ

জন্মের সঙ্গে সঙ্গে আজান-ইকামতের মাধ্যমে নবজাতকের কানে মহান আল্লাহর পবিত্র নাম, তাওহিদ ও রেসালাতের ঘোষণা পৌঁছে দেওয়া হয়। ফলে জীবনের শুরুতেই হৃদয় ও মস্তিষ্কে ঈমানের আওয়াজ পৌঁছে যায়। আর এতে শয়তানের আক্রমণ থেকেও নিরাপদ থাকে নবজাতক। জন্মের সময় কারো কানে আজান-ইকামত দেওয়া না হলে পরে হলেও আজান ও ইকামত দেওয়া জরুরি। এতে শয়তান ও মন্দ জ্বিনের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া যায়। (মিরকাতুল মাসাবিহ, শরহে মিশকাতুল মাসাবিহ: ৭/২৬৯১)


কেউ কেউ বলেন, নবজাতকের কানে আজান-ইকামত দ্বারা শিশুর কানে সর্বপ্রথম তাওহিদ ও নামাজের ডাক পৌঁছে দেওয়াই উদ্দেশ্য। তবে, সবচেয়ে বড় কথা হলো- এটি নবীজির সুন্নত। আর সুন্নত মেনে চলার মধ্যেই মুমিনের সবরকম কল্যাণ ও স্বার্থকতা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির প্রতিটি সুন্নত অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।


thebgbd.com/NIT