২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত জঙ্গি হামলার তদন্তে পুলিশের বিরুদ্ধে এবার ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তকাজে জড়িত সদস্যদের বিরুদ্ধে আসামিদের পরিবারকে গুম, নির্যাতন এবং হুমকি দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার এক বিশেষ প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হোলি আর্টিজান হামলায় ২০ জন বিদেশি ও দেশি নাগরিক নিহত হন, এছাড়া দুই পুলিশ সদস্য এবং পাঁচ সন্দেহভাজন হামলাকারীও মারা যান। ঘটনার পর ২১ জনকে আসামি করা হয়, যাদের মধ্যে ৮ জন কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হন। বাকি ৭ জনকে ২০১৯ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও, সম্প্রতি ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট তাদের সাজা পরিবর্তন করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়।
তদন্ত চলাকালে বেশ কয়েকজন দরিদ্র পরিবারের সদস্যকে গুম ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা। তারা আরও অভিযোগ করেন, পরিবারের নারী ও শিশুদের আটকে রেখে তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আসলাম হোসেন, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশীদ। তাদের পরিবার দাবি করছে, মিথ্যা প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী জানান, তাকে ও তার শিশুসন্তানকে আট মাস ধরে ডিবি কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। আব্দুস সবুর খানের পরিবারও একই ধরনের অভিযোগ করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তদন্তে যেসব প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অপর্যাপ্ত। অভিযুক্তদের কাছ থেকে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেওয়ার জন্য ভয়ানক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
হোলি আর্টিজান হামলার আসল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। ক্রসফায়ারে আসামিদের হত্যা করার কারণে হামলার প্রকৃত নেপথ্য কাহিনী অজানাই থেকে গেছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হোলি আর্টিজান হামলার মামলায় তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুতর ত্রুটি রয়েছে। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়ে দিতে পারে। তারা স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
হোলি আর্টিজান হামলার এই বিচারিক কার্যক্রম ও তদন্তের অসংগতি ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও কিছু নিয়ম আসছে, শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে। বেঙ্গল গেজেট থেকে যত দ্রুত আয় করা যায়, আমরা সেই পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছি।
thebgbd.com/NA