ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভে যোগ দেয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে, মিশরীয়-আমেরিকান শিক্ষার্থী লায়লা সাইদ একজন বন্ধুর কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছিলেন। সেই বার্তায় একটি ওয়েবসাইটের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করানো হয়।
যে সাইটটি ইহুদি ও ইসরাইলের প্রতি ঘৃণা প্রচার করে এমন ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। সেই সাইটটির নাম ক্যানারি মিশন।
লায়লা সাঈদ যখন ‘ক্যানারি মিশন’ নামক সাইটটি পরিদর্শন করেন, তখন তিনি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ অক্টোবরের সমাবেশের একটি ছবি দেখতে পান। ছবিটিতে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে লাল তীর দিয়ে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পোস্টটিতে তার নাম, সে যে দুটি শহরে বাস করে, তার পড়াশোনার বিবরণ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ‘অ্যাকটিভিটিসগুলো‘- সবকিছু উল্লেখ করা ছিল।
ক্যানারি মিশন পরে তার এক্স এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি ছবি পোস্ট করেছিল। যার ক্যাপশন ছিল ‘হামাস যুদ্ধাপরাধের ক্ষমাপ্রার্থী’। রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলা। যে হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়েছিলেন এবং ২৫৩ জনকে জিম্মি করে আনা হয়েছিল গাজায়।
সেই অভিযানের জবাবে, ইসরাইল গাজা উপত্যকায় একটি সামরিক অভিযান শুরু করে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, চলমান অভিযানে প্রায় ৩৫,০০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল।
এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অবিরত বুলিংয়ের স্বীকার হয়েছেন লায়লা সাইদ। অসংখ্য নেতিবাচক মন্তব্য এসেছে তাকে নিয়ে।
গাজায় নির্বাসনের জন্য যোগ্য প্রার্থী’- একজন লিখেছেন।
যদিও লায়লা সাইদ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করেছেন; কিন্তু পেনসিলভানিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে তিনি সেদিন প্রথমবারের মত অংশ নিয়েছিলেন। এবং ক্যানারি মিশন সেখানে অন্য কোনো কার্যক্রম দেখতে পায়নি বলে অভিযোগ করেন সাইদ।
ক্যানারি মিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দেয়া একটি অনুসন্ধানে তেলআবিবভিত্তিক জনসংযোগ সংস্থা গোভা ১০ এর একজন মুখপাত্র লিখেছেন যে, তাদের সাইটটি ৭ অক্টোবর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে সেমিটিজমের উত্থান মোকাবেলা করার জন্য কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে তাদেরকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসা যারা হামাসকে সমর্থন করে।
মুখপাত্র, এলিয়া কাউল্যান্ড, সাঈদের প্রোফাইল বা ক্যানারি মিশনের পরিচালিত অনলাইন অপব্যবহার সম্পর্কে প্রশ্নের কোন উত্তর দেননি। তিনি বলেছিলেন, যখন এই সাইটটি কিছু প্রকাশ করে তখন এটি তথ্য যাচাই করে নেয়।
ক্যানারি মিশন হল বেশ কয়েকটি ডিজিটাল অ্যাডভোকেসি গ্রুপের মধ্যে পুরোনো এবং সবচেয়ে বিশিষ্ট যেটি গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের সমালোচকদের উন্মোচন করার জন্য অভিযান জোরদার করেছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই সাইটে কারা কাজ করছেন, তাদের পরিচয়, অবস্থান এবং অর্থায়নের উৎস পুরোপুরি গোপন রেখেছেন তারা।