জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের জীবনের রুটিনটা ছিল সংগীতময়। আজ এই মঞ্চ তো কাল আরেক মঞ্চ, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ছিলো তার সংগীত সফর।
হঠাৎ তার প্রাণপ্রিয় পুত্রের দুর্ঘটনায় সব এলোমেলো হয়ে যায়। অবশেষে প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারি ব্যাংকের আয়োজনে মঞ্চে ফিরলেন এই শিল্পী।
দীর্ঘ এই বিরতির পর স্টেজ শোতে ফিরলেও মন খুবই বিষণ্ন ছিলো কুমার বিশ্বজিতের। শো শেষে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করে কোনোভাবে এই শো করা। মাঝেমধ্যে মনে হয়, ভালো থাকার বৃথা চেষ্টা।
নিবিড়ের দুর্ঘটনার পর আমার কাছে এখন পুরো পৃথিবী বিবর্ণ মনে হয়। বিবর্ণ এই পৃথিবীতে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। তাই দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটা শো ক্যানসেল করেছি। মনে থেকে কোনোভাবে সায় দিচ্ছিলো না।
তিনি বলেন, আমার কাছে এখন শিল্পীর চেয়ে বাবার অস্তিত্বটা বারবার ভেসে ওঠে। আমি যখন মঞ্চে গাইছিলাম, অবচেতন মনে নিবিড়ের মুখটা ভেসে উঠছিল। স্টেজে থাকলে অনেক সময় সবকিছু ভুলে যেতে হয়। কিন্তু বাবা–সন্তানের অস্তিত্বটা এতো গাঢ় যে প্রতি পদে পদে অনুভব করেছি।
একমাত্র সন্তান কুমার নিবিড়ের দুর্ঘটনায় কুমার বিশ্বজিতের কোনো কিছুই আর পরিকল্পনার মধ্যে নেই। মঞ্চের কোনো আয়োজনে দেখা যায়নি তাকে। কানাডায় ঘটে যাওয়া সেই দুর্ঘটনায় ছেলে নিবিড় মারাত্মক আহত হন।
হাসপাতালে জীবন–মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে থাকা একমাত্র সন্তানের পাশে থাকতে ১৪ মাস ধরে স্ত্রীসহ কানাডাই যেন তার ঘরবাড়ি। গত ১৮ এপ্রিল কয়েক সপ্তাহের জন্য ঢাকায় এসেছেন তিনি। এবার এসে তার মঞ্চের বিরতি ভেঙেছে।
ছেলের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে কুমার বিশ্বজিৎ বললেন, শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। কিন্তু কবে যে পুরোপুরি সুস্থ হবে, তা বলা মুশকিল। এখনো হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে।