ঢাকা | বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে ৪৫০ যাত্রীসহ ট্রেন হাইজ্যাক

বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ‘হাইজ্যাক’ হয়েছে।
  • অনলাইন ডেস্ক | ১১ মার্চ, ২০২৫
পাকিস্তানে ৪৫০ যাত্রীসহ ট্রেন হাইজ্যাক ট্রেনের আশপাশে বালুচ সেনা।

পাকিস্তানের গোলযোগপূর্ণ দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বালুচিস্তান প্রদেশে সশস্ত্র জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ট্রেনের চালককে আহত করে ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করেছে। কর্মকর্তারা মঙ্গলবার একথা জানিয়েছেন। বালুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটা থেকে রেলওয়ের সিনিয়র সরকারি কমকর্তা মুহাম্মদ কাশিফ বার্তা সংস্থা এএফপি’কে জানিয়েছেন, ‘বন্দুকধারীরা ৪৫০ জনেরও বেশি যাত্রীকে জিম্মি করে রেখেছে’।


পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’ জানাচ্ছে, বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে মঙ্গলবার ‘হাইজ্যাক’ করে জঙ্গিদের একটি সশস্ত্র দল। মুহম্মদ কাশিফ জানিয়েছেন, নয়টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৪৫০ জনেরও বেশি জঙ্গিদের জিম্মি হয়েছেন। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, ট্রেনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ছয় সেনা বিএলএ (বালোচ লিবারেশন আর্মি) জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হয়েছেন!


বিএলএ থেকে এই হাইজ্যাক ও যাত্রী জিম্মির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বালুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ বলেন, ‘পেহরো কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি জায়গায় যাত্রিবাহী ট্রেনটি হাইজ্যাক করা হয়।’ এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে সশস্ত্র বালুচ জঙ্গিরা ট্রেনের দখল নেয় বলে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএলএ সতর্কতা দিয়ে বলেছে, ট্রেন দখলমুক্ত করতে অভিযান চালালে যাত্রীদের হত্যা করা হবে।


শাহিদ জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, পাহাড়ঘেরা রেলপথের আট নম্বর টানেলের ভিতরে অপহৃত ট্রেনটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ‘চূড়ান্ত সতর্কতা’ জারি করেছে বালুচিস্তান প্রাদেশিক সরকার। অপহৃত ট্রেন দখলমুক্ত করতে সেনা অভিযান হতে পারে। কারণ ওই ট্রেনে বালুচিস্তানে কর্মরত বেশ কয়েকজন সেনা রয়েছেন। 


পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বালুচিস্তান প্রাকৃতিকভাবে সবচেয়ে সম্পদশালী। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে বালোচ নাগরিকদের। ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরির পর কয়েক বছরে সেই লুট আরও বেড়েছে। ওই রাস্তা ব্যবহার করেই ইসলামাবাদ এবং বেইজিংয়ের শাসকেরা বালুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বলে বিএলএ, ‘বালোচ ন্যাশনালিস্ট আর্মি’ (বিএনএ)-র মতো স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ।


দমন করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং ফ্রন্টিয়ার কোর বাহিনী সেখানে ধারাবাহিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণহত্যা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ১৯৪৭ সালের ১১ আগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয় দেশীয় রাজ্য কালাত। ১২ আগস্ট কালাতের শাসক মির সুলেমান দাউদ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মেয়াদ ছিল মাত্র সাত মাস। ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বালুচিস্তানের মানুষের কাছে সেই দিনটা আজও যন্ত্রণার ‘পরাধীনতা দিবস’! সাত দশক আগে ওই দিনেই পাকিস্তানি সেনা দখল করে বালুচিস্তান। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তৎকালীন শাসককে বাধ্য করে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হতে।


সূত্র: এএফপি, ডন


এসজেড