চট্টগ্রামের চন্দনাইশের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদের হাজার কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। একসময় খাবারের দোকানে কাজ করা এই ব্যক্তি কীভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। দুর্নীতি, চোরাচালান এবং সহিংস কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর নিকুঞ্জে হোটেল লো-মেরিডিয়ানের পাশে অভিযান চালিয়ে খিলক্ষেত থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত তার জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, জসিম উদ্দিন সাবেক দুই আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হকের ব্যবসায়িক অংশীদার এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এ সুযোগে তিনি স্বর্ণ চোরাচালান, ইয়াবা ব্যবসা এবং ঋণখেলাপির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেন।
তিনি কক্সবাজারের কলাতলী এলাকায় অবস্থিত বিলাসবহুল হোটেল রামাদারের মালিক। হোটেলটির আরেক অংশীদার হিসেবে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের নামও উঠে এসেছে। এ হোটেলে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে শত কোটি টাকার জমি, ফ্ল্যাট, এবং আবাসিক ভবন রয়েছে। তার মালিকানাধীন স্থাপনাগুলোর মধ্যে লালদীঘির পাশে মহল শপিং কমপ্লেক্স, ফিরিঙ্গি বাজারের আবাসিক ভবন, এবং চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ৮০ শতক জমি উল্লেখযোগ্য। বিদেশেও তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। দুবাই ও সৌদি আরবে একাধিক হোটেলের মালিকানা এবং প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জসিম উদ্দিন ২০ জুলাই কোটা আন্দোলনের মিছিলে অংশগ্রহণকারী দুর্জয় আহম্মেদকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালান। গুলিতে দুর্জয়ের দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায় এবং মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। পুলিশ জানায়, জসিমের নেতৃত্বে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে আন্দোলন দমনের চেষ্টা করা হয়।
বাড্ডা থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে জসিমকে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।