আখরোট একটি পুষ্টিকর বাদাম, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি সাধারণত ইংরেজিতে "Walnut" নামে পরিচিত এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Juglans regia। আখরোটের খোসা শক্ত, তবে এর ভেতরের অংশ খাওয়ার উপযোগী ও স্বাদে মিষ্টি। এটি প্রাকৃতিকভাবে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দেহের বিভিন্ন উপকার সাধন করে।
কেন আখরোট খাবেন?
১. মস্তিষ্কের জন্য উপকারী: আখরোটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে থাকে, যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং আলঝেইমার ও অন্যান্য স্নায়ুগত সমস্যার ঝুঁকি কমায়।
হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে: আখরোটে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড, যেমন আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড (ALA), রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সহায়তা করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: আখরোটে ভালো পরিমাণে প্রোটিন ও ফাইবার থাকে, যা ক্ষুধা কমায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এটি অতিরিক্ত খিদে নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: আখরোট রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: আখরোটে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বলিরেখা কমায় এবং ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে।
চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে: এতে থাকা বায়োটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। এটি চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়ক।
হাড় মজবুত করে: আখরোটে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস থাকে, যা হাড়ের গঠন মজবুত রাখে এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ঘুম ভালো হয়: আখরোটে মেলাটোনিন নামক একটি যৌগ থাকে, যা ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। রাতে ভালো ঘুম না হলে খাদ্যতালিকায় আখরোট রাখা উপকারী হতে পারে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: গবেষণায় দেখা গেছে, আখরোটে থাকা পলিফেনল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে স্তন, প্রোস্টেট ও কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে।
হজমশক্তি বাড়ায়: আখরোট প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, যা অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কার্যকর।
আখরোট স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে। প্রতিদিন ২-৩টি আখরোট খেলে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায় এবং এটি সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে।